জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:১০ পিএম
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৯ পিএম
মঙ্গলবার চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও আসবাবপত্র ভাঙচুরের অভিযোগে বাবা-ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। প্রবা ফটো
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও আসবাবপত্র ভাঙচুরের অভিযোগে চিকিৎসা নিতে আসা বাবা-ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. জাকা কাইফের চেম্বারে রোগী দেখার সময় এ ঘটনা ঘটে।
আটক দুজন হলেন- ক্ষেতলাল উপজেলার বানদীঘি গ্রামের জসিম উদ্দিন ও তার ছেলে জুয়েল হোসেন।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে চিকিৎসক মারধর করার অভিযোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুজনকে আটকে রেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে দুই ব্যক্তিকে থানায় এনেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মামলা করবে বলেছে। মামলা করলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানায়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার বহির্বিভাগের চিকিৎসক জাকা কাইফ রোগী দেখছিলেন। দুপুরে জুয়েল হোসেন নামে একজন রোগী সিরিয়াল ভেঙে চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে চিকিৎসককে রোগী দেখার কথা বললে তাকে সিরিয়ালে দাঁড়াতে বলেন। এ সময় জুয়েল হোসেন চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে চেম্বারের ভেতর চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করে তার মোবাইল ফোন, টেবিলের কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। পরে জুয়েল হোসেনের বাবা জসিম উদ্দিন সেখান থেকে তার ছেলেকে নিয়ে বাইরে আসতে চাইলে হাসপাতালের স্টাফরা বাবা-ছেলেকে আটকে রাখেন। পরে তাদের হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে বাবা-ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী এক তরুণী বলেন, পরিচিতজনদের সিরিয়াল ভেঙে চিকিৎসকের রুমের ভেতরে নেওয়া হয়। বাবা-ছেলেও সিরিয়াল অতিক্রম করে চেম্বারের ভেতর ঢোকেন। কিছুক্ষণ পর ভেতরে ঝামেলা হয়। এরপর চিকিৎসক বাইরে চলে আসেন এবং হাসপাতালের কর্মচারীরা বাবা-ছেলেকে আটকে রাখেন। পরে তাদের দুজনকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। স্টাফরা বাবা-ছেলেকেও মেরেছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জাকা কাইফ বলেন, আমি রোগী দেখছিলাম এবং একই সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া রোগীর ছাড়পত্র লিখছিলাম। এসময় দুজন ভেতরে আসেন। এসেই বলেন আমাদের দেখেন। আমি বললাম সিরিয়াল ধরে আসেন। তখন তারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং টেবিলের কাগজপত্র এলোমেলো করেন। হাসপাতালের একজন স্টাফ তাকে এসব করতে না করলে তাকে ওই ছেলে ঘুষি মারে। পরে আমি মোবাইল হাতে নিয়ে বাইরে যেতে চাইলে মোবাইল ভেঙে ফেলে। তারপর আমি বাইরে বের হয়ে তত্ত্বাবধায়ককে বিষয়টি জানাই ও তার রুমে যাই। পরে তাদের দুজনকে পুলিশে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, ‘তারা চিকিৎসা নিতে এসেছিল। ভেতরে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে ডাক্তারের গায়ে হাত তোলে। চিকিৎসকের মোবাইল ফোন ও চেম্বারের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চিকিৎসক থানায় মামলা করবেন। হাসপাতালের স্টাফরা বাবা-ছেলেকে মারধরের কথাটি সত্য নয়।’