চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৪ পিএম
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:১৬ পিএম
কূটনীতিকদের নিয়ে কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে। প্রবা ফটো
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ‘অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ আয়োজন করেছে এর মাধ্যমে বিদেশি কূটনীতিকরা বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে কূটনীতিকরা বাঙালির সামর্থ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ ও বাংলাদেশকে ভালোভাবে জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিদর্শন শেষে সব কিছুর ব্যাপারে নিজ দেশে বার্তা পৌঁছে দেবেন, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেবেন।’
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে তার সঙ্গে ২৪টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশনপ্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। পরে তারা ট্রেনযোগে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও চট্টগ্রাম থেকে প্রথম ট্রেনে করে কক্সবাজার যাচ্ছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘তাদের (কূটনীতিক) আনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা যেন বাংলাদেশকে জানেন এবং চেনেন। আমাদের দেশে যে দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত আছে, এই সমুদ্রসৈকতের খবর যেন তাদের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের সৌন্দর্য ও উন্নয়ন সম্পর্কে তারা যেন ভালোভাবে জানতে পারেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এই সফরের আয়োজন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিসর, ফ্রান্স এবং এফএও, আইইউটি, একেডিএন আন্তুর্জাতিক সংস্থাগুলোর ২৪ জন মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক এই আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের এ পরিদর্শনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে কি না– জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই তারা বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার সফরে এসেছেন তারা। চট্টগ্রামে কয়েক ঘণ্টা কাটালেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম রোড টানেল তারা দেখলেন। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার কোথাও নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নেই। সেটি তারা দেখলেন, এপার থেকে ওপারে গিয়ে আবার ফিরে আসলেন। এই যে অসাধারণ উন্নয়ন, যেগুলো আজ থেকে ১৫/২০ বছর আগে মানুষ কল্পনাও করেনি, সেগুলো এখন বাস্তব। সেই বাস্তবতা কূটনীতিকরা নিজের চোখে দেখেছেন।’
কূটনীতিকদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হতে পারে কি না– হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা আমাদের সব সময়ই হয়। তারা অনেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন। এখনও যদি তারা সুযোগ পান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন।’
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ট্রেন লাইন হয়েছিল ১৯৩০ সালে। কিন্তু তার অনেক আগেই চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ট্রেনলাইনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। অর্থাৎ ১৯০০ সালের পরপরই সেটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু দেশ ভাগ হলো। দেশ ভাগের পর বাংলাদেশ হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তিনিও বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। কারণ তাকে সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বিধ্বস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে পুনর্গঠন করার আগেই তাকে হত্যা করা হয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই জনপদের মানুষ যেই স্বপ্ন ১২৫ বছর আগে দেখেছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। এটি একটি অসাধারণ কাজ। তাই আমরা কূটনীতিকদের চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে করে কক্সবাজার নিয়ে যাচ্ছি।’