সাতক্ষীরা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৫৫ পিএম
অভিযুক্ত এএসআই জাকির হোসেন। ফাইল ফটো
সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক চাকরি প্রত্যাশী পরিবারের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এএসআই এর বিরুদ্ধে। অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা আদালতে মামলা করেছেন চাকরি প্রত্যাশী ওই যুবক। তার বিরুদ্ধে
আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি কারায় তিনি পলাতক রয়েছেন।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে গ্রেপ্তারে কাজ চলছে।
অভিযুক্ত এএসআই জাকির হোসেন আশাশুনি উপজেলার ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে কর্মরত আছেন।
এজহার সূত্রে জানা যায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ড্রাইভার পদে চাকরির জন্য ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন আশাশুনির কাদাকাটি গ্রামের মৃত আহাদ আলী মোড়লের ছেলে মনিরুল ইসলাম। লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার আগে ২১ আগস্ট দুই লাখ এবং ১৯ সেপ্টেম্বর চার লাখ টাকা এএসআই জাকির হোসেনের ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় (যার হিসাব নাম্বার ২০৫০………৭২৯২) পাঠিয়ে দেন। পরীক্ষা দেওয়ার পর জাকির হোসেন ১৬ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মনিরুল ১০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর ৮০ হাজার টাকা, ৬ ডিসেম্বর ২০ হাজার টাকা জাকির হোসেনের একই একাউন্টে পাঠান। পরবর্তীতে জাকির হোসেন ৯ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য কৌশলে ১০০ টাকার ৫টি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেন।
এজহারে আরও বলা হয়, জাকির হোসেন মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় সর্বমোট ১৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। চাকরি না পেয়ে জাকির হোসেনের কাছে দেওয়া ১৬ লাখ টাকা ফেরত চাইলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে মনিরুল স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এক সালিশ বৈঠক করেন। সালিশ বৈঠকে জাকির হোসেন ৪ মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে জানান এবং তার কমিউনিটি ব্যাংক লিঃ০০১………………০১ হিসাব নাম্বারে নিজের স্বাক্ষরিত ১৬ লাখ টাকার ব্যাংক চেক দেন। তবে তার ওই একাউন্টে কোনও টাকা ছিলনা।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এক বুক আশা নিয়ে সর্বস্ব বিক্রয় করে চাকরির আশায় ১৬ লক্ষ টাকা দিয়েছি। চাকরি না হওয়ার টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্নভাবে তালবাহনা করছে। এখন আমার মরা ছাড়া গতি নাই।’
এবিষয়ে এএসআই জাকির হোসেন বলেন, ‘১৬ লাখ নয়, মনিরুলের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা নিয়েছি। এর মধ্যে সাড়ে চার লক্ষ টাকা আমি মনিরুলকে দিয়েছি। আর সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা আমার কাছে তিনি পাবেন।’
কাদাকাটির ইউপি চেয়ারম্যান দীপঙ্কর সরকার দিপু জানান, ‘এ নিয়ে অনেকবার বিচার সালিশ করেছি।’ জাকির হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অতিদ্রুত তাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।