মিল্লাত হাসান, মিঠাপুকুর (রংপুর)
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৪৯ পিএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫১ পিএম
ঘাঘট নদী সুবহানের ঘাট এলাকায় বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল করে সাধারণ মানুষ। প্রবা ফটো
রংপুরের মিঠাপুকুর ও পীরগাছা উপজেলার সীমানা নির্ধারণকারী ঘাঘট নদীর ত্রিমোহনী ঘাট ও সুবহানের ঘাটে সেতু না থাকায় তিনটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। বিকল্প না থাকায় স্থানীয়রা এ দুটি ঘাটে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছে। কিন্তু এখন বাঁশের সাঁকো দুটিও জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। এতে ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘাঘট নদীর একপাড়ে মিঠাপুকুরের ভাংনী ইউনিয়নের কাগজীপাড়া গ্রাম সংলগ্ন সুবহানের ঘাট। অপরপাড়ে পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের পূর্ব পারুল গ্রাম। দুই পাড়েই রয়েছে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ঘাট দিয়ে দুই উপজেলার আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। পূর্বে তারা খেয়া নৌকায় পারাপার হতো। বছর দুয়েক আগে স্থানীয়রা বাঁশ-কাঠ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করছে। বর্তমানে সাঁকোটির অবস্থাও জরাজীর্ণ। ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হচ্ছে তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা রওশন আলম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি এই ঘাটে সেতু হবে। কিন্তু সে সেতু আর হয় না। নির্বাচন এলেই চেয়ারম্যান আর এমপি প্রার্থীরা এসে বলেন, এবার নির্বাচিত হতে পারলেই সেতু করে দেব। কিন্তু নির্বাচনের পর সব ভুলে যান।’
একই অবস্থা ভাংনী ইউনিয়নের বেনীপুর গ্রামের ত্রিমোহনী ঘাটেও। সেখানে অপর পাড়ে পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ি ইউনিয়নের আটষট্টিপাড়া গ্রাম। এই ঘাট দিয়েও প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচল। আর এ দুটি ঘাট মিলিয়ে তিনটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
বেনীপুর এলাকার ভ্যানচালক প্রবীণ আতাউর রহমান বলেন, ‘ত্রিমোহনী ঘাটে সেতু নাই। মানুষ পাশের কালুরঘাট দিয়ে অনেকদূর রাস্তা ঘুরি যায়। সেতুটা হইলে হামার অনেক উপকার হয়। দ্যাশ উন্নত হইছে। কিন্তু হামার উন্নতি হইল নাহ। খালি শুনি সেতু হইবে। কিন্তু সেতু হয় নাহ। হামরা বাঁচি থাকাত বুঝি সেতু দেখি যাবার পাবার নই।’
আটষট্টিপাড়া গ্রামের রাজু মিয়া বলেন, ‘২০-২৫ বছর থেকে শুনি সেতু হবে। কিন্তু এই সেতু আর হয় না। নির্বাচনের সময় এমপি প্রার্থীরা আইসে কয় এবার হবার পাইলে সুবহানের ঘাট আর ত্রিমোহনীর ঘাটে ডাবল সেতু করি দিমো। ভোট শেষে আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় নাহ।’
ত্রিমোহনী খেয়াঘাটের ইজারাদার আনারুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুর জন্য বহুবার আসি পরীক্ষা করি গেল। কিন্তু সেতু আর হয় না। এই সেতু যে কবে হবে আমরা বুঝি নাহ। নতুন এমপি হইছে। এবার আমাদের আশা সেতুটা জানি হয়।’
ভাংনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ভাংনী ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়ী থেকে সুবহানের ঘাট পর্যন্ত পাকা রাস্তা ও সুবহানের ঘাটে সেতু করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একটি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি।’
জানতে চাইলে মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ত্রিমোহনী ঘাটের সেতু নির্মাণের বিষয়টি এখন ডিজাইন পর্যায়ে রয়েছে। আর সুবহানের ঘাটের সেতুর প্রস্তাবনার বিষয়ে জানা নেই।’