× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

স্বাক্ষর জটিলতায় সনদ মেলেনি ৯ বছরেও

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪১ এএম

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪১ এএম

স্বাক্ষর জটিলতায় সনদ মেলেনি ৯ বছরেও

২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার মূল সনদ এখনও পায়নি মৌলভীবাজারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। অথচ ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যারা উত্তীর্ণ হয়েছে ওই বছরগুলোর শতভাগ শিক্ষার্থী মূল সনদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে বুঝে পেয়েছে। ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের জেএসসি উত্তীর্ণরাও সনদ পেয়েছে। শুধু ২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষার মূল সনদ দীর্ঘ ৯ বছর ধরে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বাক্ষর জটিলতায় আটকে রয়েছে বলে জানা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই বছরের জেএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেট সূত্র থেকে জানা যায়, দেশে অষ্টম শ্রেণির সমাপনীতে স্কুলগুলোতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং মাদ্রাসাগুলোতে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর নিয়মিতভাবে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালের পরীক্ষা শুরুর পর নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ৯, ১১ ও ১২ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিতব্য সকল জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সাময়িক স্থগিত করা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তীকালে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নতুন রুটিনে অনুষ্ঠিত হয়। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক মূল্যায়নের মাধ্যমে এবং ২০২১ সালে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক মূল্যায়ন এবং ৫০ নম্বর করে তিন বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি, গণিত) ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করেছিল। এর মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু করে সরকার। ফলে আর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সকল জেএসসি ও জেডিসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেটের মূল সনদ পেলেও শুধু ২০১৫ সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই এখনও মূল সনদপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে।

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা উচ্চবিদালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহমদ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মূল সনদ এখনও আসেনি। প্রথমদিকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সনদের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এখন আর কেউ আসেন না। বোর্ড থেকে মূল সনদ কেন আসেনি তা জানা নেই।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) জহির আলী বলেন, ২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষার মূল সনদের জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রায়ই যোগাযোগ করেন। আমরাও বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা সনদ পাঠানোর প্রতিশ্রুতিও দেন। সব শিক্ষা বোর্ডের জেএসসি উত্তীর্ণরা যথাসময়ে ২০১৫ সালের পরীক্ষার মূল সনদ পেলেও ৯ বছর পার হলেও আমরা এখনও মূল সনদ পাইনি। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি মৌলভীবাজার জেলার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০১৫ সালে জেএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মূল সনদ পায়নি। আমরা কবে পাব জানি না।’

মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল খায়ের মো. ফারুক আহমদ বলেন, আমি বেশ কয়েকবার বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু বোর্ড কর্তৃপক্ষ ২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষার মূল সনদ দিতে পারেনি। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সর্ববৃহৎ পরীক্ষাকেন্দ্র মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র। আমরা অনেক চেষ্টা করে ওই জেএসসি পরীক্ষার মূল সনদ পাইনি। শিক্ষার্থীরাও বিরক্ত হয়ে মূল সনদের জন্য আমাদের কাছে এখন আর আসে না।

মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমার জানা মতে, ২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষার মূল সনদ প্রদানে গ্যাপ পড়েছে। ওই বছরে আমার ছেলেও জেএসসি পরীক্ষায় পাস করে। আমি পরবর্তীকালে স্কুলে গেলেও ছেলের সার্টিফিকেট পাইনি। ওই সনদ এলে সব স্কুলে একসঙ্গেই আসার কথা। 

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেটের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট বোর্ডের অনেক স্কুলে ২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষার মূল সনদ ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে। সামান্য কিছু স্কুল বাকি রয়েছে। মৌলভীবাজার জেলার স্কুলগুলোয় হয়তো এখনো পৌঁছেনি। এগুলো আমার দায়িত্বে। দ্রুততম সময়ে সনদের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। নিজেই ফোন দিয়ে স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকদের ২০১৫ সালের মূল সনদ নিয়ে যেতে বলব। 

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেটের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘২০১৫ সালের জেএসসি পরীক্ষার মূল সনদ যিনি স্বাক্ষর করার কথা তিনি ওই সময়ে বদলিজনিত কারণে বোর্ডের এক শাখা থেকে অন্য শাখায় যোগদান করায় যথাসময়ে সনদপত্র স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে অল্প অল্প করে শিক্ষার্থীদের মূল সনদে তিনি স্বাক্ষর করছেন। কিছু স্কুলে সনদ পাঠানো হয়েছে এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে পাঠানো প্রক্রিয়াধীন। মৌলভীবাজার জেলাসহ কিছু এলাকার বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান সনদপ্রাপ্তি বাকি আছে। ২০১৫ সালে প্রায় দেড় লাখ পরীক্ষার্থী ছিল। সব সনদে স্বাক্ষর দিতে হয় হাতে। তবুও চেষ্টা থাকবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ২০১৫ সালের জেএসসি সনদ দেওয়ার।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা