× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মিয়ানমার সংঘাত

তিন দিন পর সীমান্তে ফের বিস্ফোরণ

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৩৪ পিএম

আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:০৭ পিএম

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের কারণে সীমান্তে বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের কারণে সীমান্তে বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

তিন দিন পর আবার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ও বিকালে কয়েক দফা এই বিস্ফোরণ হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজারের হোয়াইক্যং সীমান্তে নাফ নদের ওপারে টানা এক ঘণ্টা এবং বিকাল ৫টায় শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার পূর্বে পাশে মিয়ানমারের ভেতরে পরপর তিনটি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ হয়। বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে শাহপরীর দ্বীপ। এদিকে মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মি ও তাদের জোটসঙ্গীরা একটা থানা দখল করেছে বলে খবর আসছে। এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের গণমাধ্য ইরাবতী।

এই পরিস্থিতির উত্তাপ ভালো করেই আসছে কক্সবাজারে। জেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত থেমে থেমে খারাংখালী সীমান্তে গোলাগুলি শব্দ পাওয়া গেছে। ফলে সীমান্তের কাছাকাছি চিংড়ির খামারে থাকা লোকজন ভয়ে পালিয়ে এসেছে। তবে আগের তুলনায় গোলার শব্দ অনেকটা কমে গেছে। 

চিংড়িঘেরের মালিক শাহীন শাহজাহান বলেন, ‘নাফ নদের ওপারে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেনের গ্রুপের লোকজন আত্মগোপনে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার সকালে মিয়ানমারের ওপার থেকে যেসব গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে সেগুলো তাদের মধ্যকার ঘটনা হতে পারে।’ হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম, শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়ার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আমিনও এমনই বলেছেন।

টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। এ সময়ে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তবে শুক্রবার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হোয়াইক্যং ও বিকালে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে বিকট শব্দ শোনা গেছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। আর সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের যুদ্ধে যেতে বাধ্য করছে জান্তা সরকার

মিয়ানমারের গণমাধ্য ইরাবতী জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা পুরুষদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে। এসব রোহিঙ্গা রাখাইনের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির ও কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, জান্তা সরকার যুদ্ধেক্ষেত্রে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা জন্য রোহিঙ্গাদের নিয়োগ দিচ্ছে।

স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা ও বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি গ্রাম ও আশ্রয়শিবির থেকে অন্তত ৪০০ রোহিঙ্গা পুরুষকে দুই সপ্তাহের প্রাথমিক প্রশিক্ষণের জন্য সামরিক ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে। এসব রোহিঙ্গার সবার বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগসংক্রান্ত আইন পাসের পর রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে জান্তা সরকার। যদিও আইনটিতে বলা আছে, সামরিক বাহিনীতে মিয়ানমারের সব তরুণ-তরুণীর যোগদান বাধ্যতামূলক। অন্তত দুই বছর সামরিক বাহিনীতে চাকরি করতে হবে। কিন্তু নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নিজেদের বিধান চাপিয়ে দেওয়া আইনের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন মানবাধিকারকর্মীরা। রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা বাসিন্দারা জানান, সামরিক বাহিনীতে রোহিঙ্গা পুরুষেরা যোগ দিলে প্রত্যেকে মাসে এক বস্তা চাল, নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র এবং মাসিক ১ লাখ ৫০ হাজার কিয়াট (৪১ ডলার) বেতন পাবেন।

রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে কাজ করে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন। এর সহপ্রতিষ্ঠাতা নে সান লুইন বলেন, প্রশিক্ষণের সময় মাত্র দুই সপ্তাহ। চলমান সংঘাতে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করার জন্য রোহিঙ্গাদের নিয়োগ দিচ্ছে জান্তার সামরিক বাহিনী।

পুলিশ স্টেশন দখলের দাবি আরাকান আর্মির

ইরাবতী জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তওয়ের কাছে একটি থানা দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। বৃহস্পতিবার বাহিনীটি জানিয়েছে, পোন্নাগিউন পুলিশ স্টেশনটি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। পোন্নাগিউন সিত্তওয়ে থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তরে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইয়াঙ্গুন-সিত্তওয়ে সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করেছে জান্তা সরকার।

ইরাবতীর খবরে জানানো হয়েছে, আরাকান আর্মি সম্প্রতি পাকতাও শহর দখল করে। এই শহরটিও সিত্তওয়ের কাছে। বাহিনীটি রাখাইনের সামরিক কমান্ডকে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছে। না হলে তাদের পরাজিত করা হবে বলে ঘোষণা করেছে আরাকান আর্মি।

তাদের ভয়ে জান্তা সরকারের বহু কর্মকর্তা সিত্তওয়ে ছেড়ে পালিয়েছে। এ ছাড়া শহরটির বাসিন্দাদের অর্ধেকের বেশি অন্যত্র চলে গেছে। বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দাবি, তারা পোন্নাগিউন, রাথেদাউং, বুথিদাউং এবং মংডু শহরের কমান্ড সেন্টারসহ জান্তা বাহিনীর ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ চালাচ্ছে।

অপরদিকে সিত্তওয়ে, পোন্নাগিউন, রাথেদাউং এবং বুথিডাং শহরে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে জান্তা সরকার। বৃহস্পতিবার মিনবিয়া শহরের কান নি গ্রামের কাছে জান্তা বাহিনীর একটি বড় ও শক্তিশালী ঘাঁটিতে আক্রমণ করে আরাকান আর্মি। এর আগে শনিবার থেকে জান্তার ৯ম সেন্ট্রাল মিলিটারি ট্রেনিং স্কুলে আক্রমণ অব্যাহত আছে। এর কাছে থাকা তিনটি ফাঁড়ি দখল করেছে তারা। বৃহস্পতিবার ওয়াই১২ বিমান থেকে উপকূলীয় শহর রামরিতে বোমা ফেলেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। বিমান হামলা এখনও অব্যাহত আছে। এ ছাড়া যুদ্ধজাহাজ থেকেও রামরিতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে জান্তা বাহিনী। তবে আরাকান আর্মির পাল্টা হামলায় তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা