অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৫ এএম
কর্ণফুলী নদীতে নাব্যতা সংকটে বন্ধ কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা ফেরি চলাচল। বুধবার সকালে তোলা ছবি। প্রবা ফটো
কর্ণফুলী নদীতে নাব্যতা সংকটে প্রায় সময় বন্ধ হয়ে যায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনার ফেরি চলাচল। এতে দীর্ঘ সময়ের জন্য খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির সঙ্গে বান্দরবানের যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের।
গত মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। দীর্ঘক্ষণ ঘাটের দুই প্রান্তে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে যাত্রী এবং চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনই অন্তত দুবার ভাটার সময় এমন দুর্ভোগের চিত্র দেখা যায়।
ফেরির দায়িত্বরত কর্মচারীসহ স্থানীয়রা জানান, কর্ণফুলী নদীতে ভাটার সময় পানি এতটাই কমে যায় যে নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। নদীর বুকে জেগে ওঠে বালুর চর। এতে ফেরি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। ফেরির মোটরের পাখা বালুর চরে আটকা পড়ে। তাই বন্ধ রাখতে হয় ফেরি পারাপার। আবার জোয়ার এলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কথা হয় ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় থাকা বাসচালক শফিক মিয়া, আব্দুল কুদ্দুসসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, ফেরি পারাপারে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে গাড়ি চালিয়ে এসে এই জায়গায় থমকে যেতে হয়। গন্তব্যে সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারি না। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই, দুর্ভোগের অবসান চাই।
চট্টগ্রাম থেকে আসা বান্দরবানগামী একাধিক যাত্রী বলেন, একমাত্র এই ফেরির দুর্ভোগের কারণে অনেক সময় বান্দরবান যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। এখন ফেরি চলাচল বন্ধ, কখন চালু হবে এই অপেক্ষায় না থেকে আমাদের বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হয়। এতে আমাদের ভাড়াও অনেক বেশি পড়ে। তেমনি সময়ও লাগে বেশি। এই দুর্ভোগ থেকে কবে মুক্তি মিলবে জানি না।
চন্দ্রঘোনা স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল, সুমন পাটোয়ারীসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাটে একটি সেতু নির্মাণের জন্য আমরা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছি। এ ছাড়া অনেক সময় খবরও আসে এখানে নাকি সেতুর অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু এখনও আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না।’
জানতে চাইলে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীতে নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। এ সময় যাত্রীসহ চালকদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। নদীতে ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। ড্রেজিং হলে নাব্যতা-সংকট দূর হবে। এ ছাড়া ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলে জরুরি কাজে যাত্রী ও চালকদের বিকল্প সড়ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ সেতু নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্যতা যাচাইয়েরে কাজ চলছে।’