উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৬ পিএম
উলিপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। এ দিকে মেলা উপলক্ষে বসানো হয়েছে সার্কাস। ফলে ক্রীড়াপ্রেমী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রবা ফটো
কুড়িগ্রামের উলিপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম প্রায় নয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন মাঠ বন্ধ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি প্রশাসন। এর মধ্যে গত ১৯ জানুয়ারি মাঠে উপজেলা পরিষদের আয়োজনে হস্ত কুটির শিল্প ও পণ্য মেলা এবং সার্কাস শুরু হয়। অভিযোগ উঠেছে, মেলার সময় শেষ হওয়ার পরও পুনঃরায় চালুর জন্য তদবির করছে সার্কাসের মালিক পক্ষ। প্রশাসন বলছে, দ্রুত মাঠ খালি করতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রায় দুই বছর পূর্বে মাঠটি নতুনভাবে সাজানো হলেও বর্তমানে মেলা চলায় নেই খেলাধুলার পরিবেশ। এতে ক্রীড়াপ্রেমী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত বছরের জুন মাস থেকে স্টেডিয়াম মাঠে খেলাধুলা বন্ধ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন মাঠটি বন্ধ থাকার পর গত ১৯ জানুয়ারি মাঠে উপজেলা পরিষদের আয়োজনে হস্ত কুটির শিল্প ও পণ্য মেলা এবং সার্কাস শুরু দীর্ঘদিন থেকে খেলার মাঠ বন্ধ থাকায় ক্রীড়াপ্রেমী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ছাড়া স্টেডিয়ামের পাশে রয়েছে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র। মেলা নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে মেলা কর্তৃপক্ষ আবারও পুনঃরায় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মেলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চালানো হয়েছে। বর্তমানে চলমান মেলার বিষয়গুলো আমার জানা নেই। তবে আমি শুনেছি সার্কাস ও মেলার প্রোপাইটার জাহাঙ্গীর হোসেন প্রশাসনের কাছে ধরনা দিচ্ছেন মেলাটি পুনঃরায় চালানোর জন্য। দীর্ঘদিন ধরে খেলার মাঠ বন্ধ ও এসএসসি পরীক্ষা চলমান এ অবস্থায় মেলা চালানো কতটুকু যৌক্তিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলোর সঙ্গে আমি আর নেই।
সার্কাস ও মেলার প্রোপাইটার (মালিক) জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সার্কাস ও মেলার পুনঃরায় অনুমতির জন্য জেলা সদরে অবস্থান করছি। ফিরে গিয়ে মেলার সার্বিক বিষয়ে কথা হবে।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, মেলা ও সার্কাসের বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে দীর্ঘদিন ধরে খেলার মাঠটি বন্ধ রাখা দুঃখজনক।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবলার জিয়াউর রহমান, শাওন আহম্মেদ, ক্রিকেটার মেহেদী হাসান ও ফুয়াদ হোসেনসহ কয়েকজন অভিযোগ করে জানান, খেলাধুলার কথা কেউ চিন্তা করেন না। আমরা শুনেছি ‘খেলার মাঠে মেলা হবে না’ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়ে কাজ করে যাচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। প্রায় দুই বছর পূর্বে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠটি সংস্কার করা হয়। অথচ মেলার কারণে দীর্ঘ নয় মাস ধরে মাঠ বন্ধ রাখা হয়েছে। উপজেলার সকল খেলোয়ারদের দাবি দ্রুত খেলার মাঠটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টি করা হোক।
স্টেডিয়াম মাঠের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন, মেলা চালানোর অনুমতি এক সপ্তাহ পূর্বে শেষ হয়েছে। তাদের দ্রুত মাঠ খালি করতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও যদি তারা বিলম্ব করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।