রানা আহমেদ, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৫৪ এএম
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৪ পিএম
ঢাকার কেরানীগঞ্জ কলাতিয়া ইউনিয়নের খারাকান্দিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় কয়েকটি সেতু নির্মাণ হয়। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না সেতুগুলো। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো
জনদুর্ভোগ লাঘবে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় কয়েকটি সেতু নির্মাণের পর কিছুটা আনন্দিত হলেও এখন তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না সেতুগুলো। এতে দুর্ভোগ রয়েই গেছে জনগণের। দুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেতুগুলোর সংযোগ সড়ক দাবি করেছেন তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার শাক্তা ইউনিয়নের বলসতা খালের ওপর চার বছর আগে নির্মিত হয় একটি সেতু। তবে সেতুতে ওঠা-নামার জন্য নেই সংযোগ সড়ক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ১০৬ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতু।
মেহেরুন নেছা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, ‘সেতু করেছে, কিন্তু পার হওয়ার রাস্তা নেই। কবে মাটি ফেলে রাস্তা করবে কে জানে। রাস্তা না হলে এই সেতু দিয়ে আমাদের কী লাভ?’ এ ব্যাপারে শাক্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সড়ক, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ হয় মানুষের উপকারের জন্য। কিন্তু কিছু পরিকল্পনার জন্য এগুলোর সুফল পায় না জনগণ। সেতুতে যাতে করে সহজে মানুষ যাতায়াত করতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হবে।’
অন্যদিকে কলাতিয়া ইউনিয়নে সিংহ নদীর খালের ওপর নীলটেক পাকা রাস্তা থেকে পূর্ব আকছাইলে পাশাপাশি দুটি সেতু নির্মাণ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এগুলোও নির্মাণ করা হয় অধিদপ্তরের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায়। একটি নির্মাণ করা হয় গত অর্থবছরে; অন্যটি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে। দুটির নির্মাণ ব্যয় ছিল ৩২ লাখ টাকা।
অসম্পূর্ণ অবস্থায়ই রয়েছে সেতু দুটি। পরবর্তীকালে এলাকাবাসী মাটি ফেলে সংযোগ সড়ক তৈরি করলেও যান চলাচল করতে পারে না। অন্যটিতে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুতে চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের সাঁকো।
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছেও গিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। খালের ওই পারে স্কুলের সঙ্গে একটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এ ছাড়া কবরস্থানে লাশ নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। একটা মানুষ মারা গেলে ভ্যান দিয়ে অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়।
শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে ঝুঁকিপূর্ণ ও চরম দুর্ভোগের যাতায়াত থেকে মুক্তি দিতে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ওই এলাকার লুৎফুর রহমানসহ অন্য আরেক বাসিন্দা। কলাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহের আলী বলেন, নতুন সেতুটি গত অর্থবছরের। এটার কাজ অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শেষ করা হবে। শুনেছি কিছুদিনের ভেতরে ঠিকাদার সংযোগ সড়ক তৈরি করে দেবেন।
এসব সেতু সম্পর্কে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নতুন বরাদ্দ চেয়ে হেড অফিসে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন সেতুটির কাজ শেষ হয়ে যাবে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নির্মিত পুরোনো সেতুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন জয়েন করেছি। ওটা আমি দেখিনি। দেখলে বুঝতে পারব।