× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ইটভাটা গিলে খাচ্ছে ফসলি জমির মাটি

মো. আতিকুল ইসলাম, সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ)

প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৩৪ পিএম

১২ থেকে ১৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে আশপাশের কৃষিজমিও ভেঙে পড়ছে। উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের রিবাইতপুর মৌজার সোনাটেংরা গ্রামের একটি জমির চিত্র। প্রবা ফটো

১২ থেকে ১৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে আশপাশের কৃষিজমিও ভেঙে পড়ছে। উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের রিবাইতপুর মৌজার সোনাটেংরা গ্রামের একটি জমির চিত্র। প্রবা ফটো

তিন ফসলি জমি থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। সেই মাটি যাচ্ছে ইটের ভাটায়। ১২ থেকে ১৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে আশপাশের কৃষিজমিও ভেঙে পড়ছে। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার ক্ষুদ্র ভূমিমালিক ও কৃষকরা। স্থানীয় প্রশাসন তৎপর হয়েও বন্ধ করতে পারছে না মাটি কাটার এই ভয়ঙ্কর অপতৎপরতা। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের রিবাইতপুর মৌজার সোনাটেংরা চকে ভূমিখেকো স্থানীয় প্রভাবশালী আনোয়ার শিকদার গত এক মাস ধরে ভেকু লাগিয়ে অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর শুরু হয় এই মাটি কাটা। গভীর রাত পর্যন্ত মাটি কাটার পর তা নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী এনবিএন, শার্ক ও এইচবিসিÑএই তিনটি ইটের ভাটায়। এতে মাটি ব্যবসায়ীদের লাভ হলেও কমে যাচ্ছে উর্বর আবাদি জমি। ফলে কমছে খাদ্য উৎপাদন। অন্যদিকে মাটি বহনকারী ট্রলি ও ট্রাকের দাপটে গ্রামীণ রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় জমির মালিক ইখলাস খান বলেন, ‘আমাদের চকটিতে আমন ধান, ইরি ধান, সরিষা ও গমের ব্যাপক ফলন হয়। কিন্তু মাটি ব্যবসায়ী আনোয়ার শিকদার পুরো চকটি থেকে মাটি তুলে বিক্রি করছেন ইটের ভাটায়।’ এ কাজের সঙ্গে চান্দহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হোসেনও জড়িত বলে জানান তিনি।

ইখলাস খান বলেন, ‘চেয়ারম্যানের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও মাটি কাটা বন্ধ করতে পারিনি। রিবাইতপুর মৌজায় ফসলের কিছু জমি থাকলেও চান্দহর মৌজার তিনফসলি জমিগুলো এখন পরিণত হয়েছে ডোবা আর পুকুরে।’ তিনি বলেন, ‘মাটি কাটা বন্ধ না হলে দুয়েক বছর পর ফসল ফলানোর মতো কোনো জমি পাওয়া যাবে না। আমরা এই জমিতে চাষবাস করে খাই। সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, এই ফসলের জমি থেকে যেন মাটি কাটা বন্ধ করা হয়।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, ‘এলাকার চিহ্নিত মাটিখেকো চক্রের আনোয়ার শিকদার কৃষকদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কখনও জমির মাটি, কখনও-বা জমি কিনে নেয়। এভাবে রাতের আঁধারে মাটি কেটে প্রায় পুরো চকটাকে তারা জলাশয় বানিয়ে ফেলেছে। ক্ষতির আশঙ্কায় পাশের জমির মালিকরাও তাদের কাছে মাটি ও জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মাটি ব্যবসায়ীদের দাপটে এলাকায় কেউ টুঁ-শব্দ পর্যন্ত করতে সাহস পায় না। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাটি ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার শিকদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘মাটি কেটেছি, তাতে আপনার সমস্যা কী?’ তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমার সাথে কথা বলতে হলে সাক্ষাতে কথা বলতে হবে। আপনি আমার প্রজেক্টের এখানে আসেন। এসে দেখা করেন। সরাসরি কথা বলব‌।’ এই বলেই তিনি কল কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণভাবে মাটি কাটার বিপক্ষে। আমি কখনই মাটি কাটার সাথে জড়িত ছিলাম না। আর এরকম কাজের সাথে জড়িত হবও না। মাটি কাটা নিয়ে আমি উপজেলা মিটিংয়েও আলোচনা করেছি। আনোয়ার শিকদার বেশ কয়েক বছর ধরে মাটি কাটছেন। বিষয়টি আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমি মাটি কাটা বন্ধের জন্য প্রশাসনকে সব সময় সহযোগিতা করতে রাজি।’ 

সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা যেসব অভিযোগ পাই, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। ভেকু ও মালামাল জব্দসহ জরিমানাও করা হচ্ছে। ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার কোনো সুযোগ নেই। তবে কৃষকদেরও একটু সচেতন হতে হবে। মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে এবং থাকবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা