× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পদ্মার তীরে মাটি কাটার ধুম, ভাঙনের শঙ্কা

শিশির খাঁন, সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর)

প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৩ এএম

এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে ৪০-৫০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রবা ফটো

এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে ৪০-৫০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রবা ফটো

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আকোটের চর ইউনিয়নের ছলেনামা গ্রামের পদ্মা নদীর তীরে চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার ধুম। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিন-রাত ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি মহল। এতে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষিজমি। এক্সকাভেটর দিয়ে এমনভাবে মাটি কাটা হচ্ছেÑ একটু বৃষ্টি হলেই পাশের জমি ভেঙে পড়বে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাশের জমির মালিকও। সেই সঙ্গে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ। এতে বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙনের কবলে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে প্রায় ৫০টি পরিবার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আকোটের চর এলাকার নতুন ছলেনামা গ্রামের পদ্মার পার থেকে রাতের আঁধারে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে ৪০-৫০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। ইটভাটা মালিকরা কৃষকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে নদীপারের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়বে ছলেনামা গ্রামসহ শত শত একর ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা।

কৃষিবিদদের মতে, জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি (টপ সয়েল) গভীরের মাটিতেই মূল পুষ্টিগুণ থাকে। মূলত মাটির এই স্তরে ফসল উৎপাদিত হয়। মাটির এই স্তর কেটে নেওয়ায় জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হয়। এজন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেও কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না। তা ছাড়া কৃষিজমি ওপরের এ টপ সয়েল হারিয়ে ফেললে তা স্বাভাবিক হতে প্রায় ১০-১২ বছর লাগে।

প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছে না। এমন একাধিক কৃষক জানান, অবৈধভাবে মাটি ও বালু কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। পদ্মার পার থেকে রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত মাটি কাটে তারা। রতভর চলে তাদের কর্মযজ্ঞ। এভাবে চলতে থাকলে বর্ষায় আমাদের ভিটেমাটি হারিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কৃষক জানান, রাত ১১টায় তাদের মাটি কাটা শুরু হয় এবং ভোররাতে এক্সকাভেটর ও ট্রাক নিয়ে চলে যায়। উপজেলা প্রশাসন মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দ্রুত মাটি ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। না হয় আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

একজন জমির মালিক জানান, নদ-নদীর চরের নতুন মাটিতে শস্য খুব ভালো ফলে। জমিতে বাদাম, ভুট্টা, কলইয়ের চাষ করা হয়। তবে পাশের জমির মালিক মাটি কেটে বিক্রি করছে। মাটি টানার জন্য ব্যবহৃত গাড়ি চলাচলের কারণে তার জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া ধুলো ও রাতভর গাড়ির শব্দের কারণে তাদের বসবাস করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে সদরপুরের পদ্মা পারের বিভিন্ন এলাকা নদীভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারিয়েছে কয়েকশ পরিবার। আর এখন শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা পারের মানুষের নতুন আতঙ্ক মাটি ব্যবসায়ীরা। পদ্মার ভাঙন ও মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ), ২০১৩ অনুযায়ী, কৃষিজমির মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করা নিষিদ্ধ। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ আইন প্রয়োগ করবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

জানতে চালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, আমরা নিয়মিত মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। পদ্মার পাড় থেকে রাতের আঁধারে মাটি কাটার ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। পদ্মার চর দুর্গম এলাকা হওয়ায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ফরিদপুরের সদরপুরে ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে অবৈধভাবে কাটা হয় মাটি। সম্প্রতি উপজেলার আকোটের চর ইউনিয়নের ছলেনামা গ্রামের পদ্মার তীরে


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা