হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৫৬ এএম
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের বারান্দায় নার্সারি করে সফল ফাতেমা বেগম
ফাতেমা বেগম ও রঞ্জু মিয়া দম্পতিকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আধাপাকা ঘর দেওয়া হয়েছে। সে ঘরে তিন সন্তান নিয়ে সুখেই বসবাস করছেন তারা। ভূমি ও গৃহহীন ফাতেমা বেগম একজন উদ্যোক্তা। ঘরের পাশেই করেছেন নার্সারি। ফলদ ও সবজির চারা বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেছেন।
ফাতেমা বেগম টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার পৌর শহরের শিয়ালকোল ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাওয়ার আগে তারা অন্যের জায়গায় বসবাস করতেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের বারান্দায় ফাতেমা চাষ করেছেন ফলদ বৃক্ষ ও সবজি নার্সারি। ছোট এ নার্সারিতে ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির চারা রয়েছে।
ফাতেমা বেগম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘরের বারান্দা ও উঠানের সামনের জায়গা পতিত না রেখে চিন্তা করলাম ছোট পরিসরে একটি নার্সারি বাগান করা যায় কি না। স্বামীর সহযোগিতায় নার্সারি করি। প্রথমে অল্প প্রজাতির চারা নিয়ে শুরু করি। বর্তমানে ২০-২৫ ধরনের চারা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন এসব বিক্রি করে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় হয়। আগে অভাবের সংসার থাকলেও বর্তমানে ভালোভাবে চলতে পারছি। সন্তানরা ঢাকায় চাকরি ও রাজমিস্ত্রির কাজ করে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর ও জায়গা না পেলে ভাগ্য বদল হতো না। আমাকে ঘর দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করি। তিনি হাজার বছর বেঁচে থাকুন। সরকারিভাবে যদি আমাকে সহযোগিতা করা হয় তাহলে নার্সারি আরও বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা আছে।’
ফাতেমা বেগমের স্বামী রঞ্জু মিয়া বলেন, ‘ঘর না থাকায় আগে হতাশায় দিন কাটত। আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘরের জন্য আবেদন করলে সেটা পাই। এখন অনেক ভালো আছি পরিবার নিয়ে। আমার স্ত্রী ঘরের বারান্দায় ও সামনের উঠানে চারা লাগিয়েছেন। তাকে কাজে সহযোগিতা করি।’
শিয়ালকোল ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্প সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এখানে ১২টি পরিবার রয়েছে। কেউ সেলুন দোকান করছেন, কেউ দর্জির কাজ করছেন, কেউবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। প্রকল্পের উঠানে সবজি চাষ করেছেন কেউ কেউ। সুখেই দিন কাটছে তাদের।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভূঞাপুর পৌরসভার শিয়ালকোল আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১২টি পরিবার বসবাস করছে। এর মধ্যে ফাতেমা নামে এক উপকারভোগী নারীকে নার্সারি বাগান করতে উৎসাহ প্রদান করলে তিনি নার্সারি করেন। চারা বিক্রি করে নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা স্বাবলম্বী হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের সমিতির মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করি। যে যে পেশায় যেতে চান তাদের সহযোগিতা করি। শুধু ফাতেমাকেই নয়, এখানকার কয়েকজনকে মুদি দোকান, সেলুনের দোকান, ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরেক নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়। এসব বাসিন্দা এখন সুন্দরভাবে পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করছেন। ফলে তাদের জীবনমান উন্নত হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গৃহ ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আধাপাকা ঘর উপহার হিসেবে প্রদান করে সরকার। যে নারী উদ্যোক্তা হয়ে নার্সারি করেছেন তা প্রশংসনীয়। আশ্রয়ণে যারা বসবাস করছেন তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।’