মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা
মধ্যাঞ্চলীয় অফিস
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩০ পিএম
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:১১ পিএম
১ লাখ ২ হাজার ৩৬৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হয়েছেন তিনি। ১০০ নম্বরের ১ ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষায় ৯২ দশমিক ৫ নম্বর পেয়ে হয়েছেন দেশসেরা। বলছি, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করা তানজিম মুনতাকা সর্বার কথা।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌরসভার বেথইর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান সবুজের সন্তান সর্বা। নিজের পরিশ্রম আর পরিবারের অনুপ্রেরণায় প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে প্রথম হয়েছেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়। তার এমন সাফল্যে পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ। সর্বার বাবার ইচ্ছা, ভবিষ্যতে তার মেয়ে যেন একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলে।
আব্দুর রহমান সবুজ ও চায়না বেগম দম্পতির মেয়ে সর্বা দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সর্বা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার এ সাফল্যের পেছনে মা-বাবা ও শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা আমাকে সব বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে মা-বাবাই আমার বড় অনুপ্রেরণা। সব বিষয়েই আমি তাদের সমর্থন পেয়েছি। মেডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতির সময় লেখাপড়ার চাপে মাঝেমধ্যে বেশ হতাশায় পড়তাম। তখন তারা আত্মবিশ্বাস জোগাতেন। তাদের কথায় নিজেকে আবার ফিরে পেতাম। আব্বু-আম্মুর সহযোগিতাই আমাকে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’
ডাক্তারি লেখাপড়ার মতো কঠিন বিষয় বেছে নেওয়া বা ডাক্তার হওয়ার কারণ সম্পর্কে সর্বা বলেন, ‘আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কেউ ডাক্তার নেই, ডাক্তার হতে চাওয়ার এটা একটি অন্যতম কারণ। বলা যায়, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে আমিই প্রথম ডাক্তার হতে যাচ্ছি। এ ছাড়া ডাক্তার হওয়ার জন্য আমার শিক্ষকরাও পরামর্শ দিতেন। তাদের পরামর্শেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। এমবিবিএস শেষ হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব কোন বিষয়ে ডাক্তার হব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভালো ফলাফল অর্জনে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও কম নয়। তাদের সহযোগিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। সার্বক্ষণিক সহযোগিতা পেয়েছি শিক্ষকদের। হলিক্রসে যেভাবে আমাদের পড়াশোনা ও পরীক্ষা নিয়েছে, দ্রুতই সিলেবাস শেষ হয়ে গেছে। এ ছাড়াও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনার সময়ও সবার অনুপ্রেরণা পেয়েছি।’
সর্বার বাবা আব্দুর রহমান সবুজ বলেন, ‘আমি পেশায় একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছি। পরিবার নিয়ে রাজধানীতে বসবাস করি। সর্বা ঢাকায় বড় হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই সে লেখাপড়া-অন্তঃপ্রাণ। আমাদের বংশে ডাক্তার নেই। আমার মেয়েই প্রথম ডাক্তার হতে যাচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য সে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তার এমন সাফল্যে আমরা আনন্দিত। আমার একটাই চাওয়া, ভবিষ্যতে সে যেন একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।’
তানজিম মুনতাকা সর্বার চাচা কটিয়াদী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মেয়ে সর্বা। তার সাফল্যে আমরা সবাই আনন্দিত, অনেক গর্বিত।’