মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:০০ পিএম
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৫৮ পিএম
শহিদুল ইসলাম। প্রবা ফটো
রংপুরের মিঠাপুকুরে বৃদ্ধা মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া এবং চেক বই কেড়ে নিয়ে ব্যাংকে জমানো টাকা উত্তলন করার অভিযোগ উঠেছে শহিদুল ইসলাম নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। সোমবার (১২ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুত্রবধু ও সন্তানের বিরুদ্ধে মিঠাপুকুর থানা লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই বৃদ্ধা। তিনি জানান, পুত্রবধু এবং ছেলের মারধরের ভয়ে দুই মাস থেকে বাড়ি ছাড়া তিনি।
অভিযোগকারী সহিদা বেওয়া উপজেলার ৭ নম্বর লতিবপুর ইউনিয়নের লতিবপুর (বউবাজার) গ্রামের মৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর স্ত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, স্বামী মোসলেম আলী মারা যাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার মাসিক ভাতা পেতেন সহিদা বেওয়া। এছাড়া সরকারি সুবিধা অনুযায়ী ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকায় এককালীন দশ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ করেন তিনি। সেখান থেকে আট লাখ টাকা তিনি ছেলেমেয়েদের মাঝে ভাগ করে দেন এবং দুই লাখ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। কিন্তু বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম তার ভাগের টাকা নেওয়ার পরও ব্যাংকে সহিদা বেওয়ার জমানো দুই লাখ টাকা উত্তোলনের জন্য চাপ দিতেন এবং মারধর করতেন। পরে সহিদুল ইসলাম চেক কেড়ে নিয়ে টাকা উত্তোলন করেন।
অভিযোগ থেকে আরও জানা গেছে, প্রাপ্ত ভাতা থেকে ঋণের জন্য টাকা প্রতিমাস ১২০০০ টাকা কেটে নেওয়ার পর তিনি আট হাজার টাকা করে পেতেন তিনি। কিন্তু সে টাকাও শহিদুল ইসলাম একাই ভোগ করতেন। গত ১২ ডিসেম্বর সহিদুল ভাতা তুলতে শহিদা বেওয়াকে নিয়ে ব্যাংকে গেলে সহিদা বেওয়া ব্যাংক ম্যানেজারকে অভিযোগ করেন। শহিদুল তাকে জনসম্মুখে ব্যাংকের নীচে মারধর করে এবং বাড়িতে নিয়ে এসে তার স্ত্রী এবং সন্তানকে দিয়ে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর স্থানীয়রা শহিদা বেওয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে তার মেয়ের বাড়িতে পাঠান। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং স্বজনদের নিয়ে বাড়িতে যান। এসময় ছেলে শহিদুল রহমান উত্তেজিত হয়ে তার মা এবং বোনকে বেধড়ক পেটায় এবং বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়। পরে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়।
বৃদ্ধা সহিদা বেওয়া জানান, শেষ বয়সে ছেলের অত্যাচারে তার জীবন অতিষ্ঠ। লোভী ছেলে এবং পুত্রবধূ কোনো কারণ ছাড়াই তাকে মারধর করেন। তার ভরনপোষণ না করে বরং মুক্তিযোদ্ধা ভাতার সম্মানীও খেয়ে ফেলেন। মানসিক আর শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে তিনি ভেঙ্গে পড়েছেন। এসময় ছেলের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে কেঁদে কেঁদে তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত এবং জখমের চিহ্ন দেখান।
অভিযুক্ত সহিদুলের নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি তার বাড়িতে গিয়েও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বাদী হয়ে তার ছেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিট পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।