× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রেলের উন্নয়ন করতে গিয়ে ‘সর্বনাশ’

নাজমুল হুদা, চিলমারী (কুড়িগ্রাম)

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২৪ পিএম

আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৩৬ পিএম

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা বাজার স্টেশন এলাকায় রেললাইন ঘেঁষে মাটি কেটে তা আবার লাইনে ফেলা হচ্ছে। সাম্প্রতিক ছবি। প্রবা ফটো

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা বাজার স্টেশন এলাকায় রেললাইন ঘেঁষে মাটি কেটে তা আবার লাইনে ফেলা হচ্ছে। সাম্প্রতিক ছবি। প্রবা ফটো

কুড়িগ্রামে রেলওয়ের প্রায় ২ কোটি টাকার উন্নয়নকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা বলছে, মাটি ভরাটে আলাদা বরাদ্দ থাকলেও ঠিকাদারের লোকজন রেললাইন ঘেঁষে মাটি কাটছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কাজের কোনো তদারকি করছে না। 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে চিলমারী উপজেলার রমনা বাজার স্টেশন পর্যন্ত ১০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার রেলপথের উন্নয়নে ঠিকাদার নিয়োগ করে রেলওয়ে বিভাগ। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয় ঢাকার বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ ৯ হাজার ৫৩৭ টাকা। এর মধ্যে মাটির কাজ ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

উলিপুর থেকে রমনা বাজার পর্যন্ত কাজের চুক্তিতে আছে- ঠিকাদার অন্য জায়গা থেকে মাটি কিনে এনে রেললাইনে ফেলবে। রেলের জায়গার মাটি কাটতে পারবে না। যখন রেলের জায়গা থেকে ১ ঘনমিটার মাটি কাটবে তখন সেটি উল্লেখ থাকবে এবং তার মূল্য ২৩৩ টাকা। আর বাইরে থেকে কিনলে তার মূল্য হবে ৬৬৬-৭৬০ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ৬৬৬ টাকায়। অর্থাৎ বাইরের মাটি এনে ফেলার কথা তাদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বাইরে থেকে মাটি না এনে রেললাইনের পাশ ঘেঁষে মাটি কাটছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে রেলপথটি। রেলওয়ের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। 

অবশ্য স্থানীয়দের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেল সরেজমিনেও। সম্প্রতি রমনা স্টেশনের কাছে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক মাটি কাটছেন। রেললাইন ঘেঁষেই মাটি কেটে তা ওপরে ফেলছেন। রেললাইন ঘেঁষে মাটি কাটায় বৃষ্টি হলেই তা ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আমাদের এখান থেকেই মাটি কাটতে বলা হয়েছে। অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে কোথাও ফেলা হচ্ছে না। 

কাজের এমন অনিয়মের ব্যাপারে রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, ‘রেল বিভাগের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। অপরদিকে সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করেছে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি যে উদ্দেশ্যে এ কাজ করা হচ্ছে, তা পূরণ হবে না। বর্ষাকালে রেললাইনের মাটি ধসে যেখান থেকে কাটা হয়েছে সেখানেই চলে যাবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘রেলওয়ের দুর্নীতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি ২০২০ সালে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রেলওয়ের ১০টি খাতে দুর্নীতি হয় বলে জানিয়েছে। আমাদের দাবি, চুক্তিতে যেভাবে আছে, সেভাবেই কাজ করা হোক।’ 

এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধির সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আব্দুস সালামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে এই প্রতিবেদকের পরিচয় জানিয়ে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। 

তবে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন) আরিফুজ্জামান বলেন, ‘কুড়িগ্রামে কোনো উন্নয়নকাজ হচ্ছে কি না জানা নেই। সেখানে কাজে অনিয়ম হয়ে থাকলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’ অনিয়ম কীভাবে হচ্ছে, কতটুকু হচ্ছেÑ সেটা তদন্ত না করা পর্যন্ত এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘রেলওয়ের উন্নয়নকাজে অনিয়মের কথা শুনেছি। তাদের অনিয়মে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা