মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:১৬ পিএম
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৩৪ পিএম
‘ধর্ষণের শিকার’ শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। প্রবা ফটো
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সাত বছরের মেয়েটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার বাবা বলছে, এ ঘটনায় মামলা করলে হুমকির মুখে পড়বে তার জীবন-জীবিকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিশুর পরিবারের এক আত্মীয় জানায়, আর্থিক ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিউজ করার দরকার নেই। তবে পুলিশ বলছে, মামলা হলেই তারা আইনি পদক্ষেপ নেবে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মুসা মিয়ার বাড়িতে শিশুটি খুন্তি ফেরত দিতে যায়। দীর্ঘসময় সে ফেরত না আসায় তার মা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় তার মেয়ে মেঝেতে পড়ে আছে। তখন বাচ্চার মা চিৎকার করে মুসার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলে। অসুস্থ শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রবিবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটিকে হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে শিশুর পরিবারের কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে না।
অন্য এক প্রসঙ্গে শিশুর বাবা বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। কেস করে কী করব। মুসা মিয়ার জমিতে আমার ছোট ভাই ১০-১৫ লাখ টাকা খরচ করে খামার করেছে। সেই খামারে আমি কাজ করে খাই। এখন যদি মামলা করি, ওরা তো বের করে দেবে। তখন আমি কী করে খাব। আমার ছোট ভাই আছে, মিজান আছে। তারা যা করার করবে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।’
শিশুর চাচার বন্ধু মিজান বলেন, ‘ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে। সে প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।’
অভিযুক্ত মুসা মিয়ার ভাই রায়হান কবির বলেন, ‘এটা আমাদের বিরোধী গ্রুপের ষড়যন্ত্র। আমার ভাইয়ের নাতনির বয়সি এই মেয়ে। শিশুটি হয়তো ভয় পেয়েছিল। ওই শিশু নিয়মিতই আমাদের বাসায় যাতায়াত করে। ওরা নিয়মিতই খুন্তি, কুড়াল, কোদাল- এসব আমাদের বাসা থেকে নিয়েই কাজ করে। সেদিনও শিশুটি খুন্তি ফেরত দিতে আসছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সমাধান হয়ে যাবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিশুর পরিবারের নিকটাত্মীয় জানায়, ‘এ বিষয়ে একটি সমাধান হয়েছে। শিশুর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। আর্থিক ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিউজ করিয়েন না।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আ ম আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি গতকাল ছিলাম না। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। পরিচালক স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ইউনুস আলীর সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মিঠাপুকুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। ভিকটিমের পরিবারকে মামলা করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা অজুহাত দেখিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। ধর্ষিত না হলেও শিশুটিকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ দিলেই মামলা নেওয়া হবে।’