মাদারীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৩ এএম
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪১ এএম
মাদারীপুরে ঘনবসতি ও খাদ্য সংকটে লোকালয়ে বেড়েছে বানরের উৎপাত। সুযোগ পেলেই এই বানরগুলো ঢুকে পড়ছে এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে। সেখান থেকে রান্না করা খাবার এমনকি কাঁচা সবজি নিয়েও দৌঁড়ে পালাচ্ছে তারা। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে আসা এই বন্য প্রাণীগুলো বিভিন্ন পরিস্থিতিতে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ভারসাম্য রক্ষায় বানরগুলোকে নিরাপদ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাদারীপুরের নয়াচর ও চরমুগরিয়া এলাকায় খাবারের সন্ধানে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে বানর। কখনও ফল গাছে, কখনও বা ঘরের চালে। সকাল থেকে বিকেল, এভাবেই দল বেঁধে ছুটে বেড়াচ্ছে তারা। পর্যাপ্ত খাবার না পেলে বাসাবাড়িতেও হানা দিচ্ছে এই বানরের দল। এতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
এরইমধ্যে মাদারীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ৬ বছর বয়সী শিশু রুহানি আক্তার বানরের অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছে। কামড়িয়ে তার পায়ের মাংস ছিঁড়ে নিয়ে গেছে এক বানর। এ ব্যাপারে রুহানীর মা কুমকুম বেগম বলেন, আমার মেয়ে এখন একা ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়। খেলতে ও স্কুলে যেতে চায়না । এরা খাবার না পেলেই বাড়ির ভিতরে ঢুকে মানুষের হাত থেকে খাবার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। দ্রুত এদের খাবারের ব্যবস্থা করা উচিত।
স্থানীয়রা জানায়, সরকারিভাবে বানরের জন্য খাবার বরাদ্দ থাকলেও তা নিয়মিত দেওয়া হয় না। একটা সময় চরমুগরিয়া এলাকা বানরের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত ছিল। একদিকে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে ঘনবসতি দুই কারণেই বানরের সংখ্যা কমে গেছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ প্রাণীকে টিকিয়ে রাখার আহ্বান এলাকাবাসীর।
চরমুগরিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বানর সারাক্ষণ উৎপাত করে। সরকার থেকে খাবারের যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তা কখনই চোখে পড়ে না। এক বা দুই সপ্তাহ পরে একদিন খাবার দিয়ে গেলে, আর কোন খবর থাকে না। এজন্য প্রতিনিয়তই বাসা-বাড়ি ও দোকানে খাবারের জন্য বানর হানা দেয়। এছাড়া গাছের ফল সবজি খেয়ে ফেলে ও নষ্ট করে।
খাগদী এলাকার বাসিন্দা আবির হাসান বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বানরগুলোকে পর্যাপ্ত খাবার দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন।
মাদারীপুরের বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, বরাদ্দ কম থাকায় বিভিন্ন স্পটে মাসে ১২ দিন খাবার দেওয়া হচ্ছে। মাদারীপুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় আট হাজার বানর থাকলেও বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজারে। চলতি অর্থবছরে বানরের খাবারের জন্য ২৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, বানরের খাবার বিতরণে কোনো অনিয়ম থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কী কারণে বানরের সংখ্যা কমে যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।