মধ্যাঞ্চলীয় অফিস
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৫ পিএম
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৩৮ পিএম
পিঠা উৎসবে মুখরিত শোলাকিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রবা ফটো
গ্রাম-বাংলার বহুদিনের পুরানো ঐতিহ্যকে স্মরণ করতে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক ব্যতিক্রমী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১০ ফ্রব্রুয়ারি ) বেলা ১১টার দিকে শোলাকিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর হাসিনা হায়দার চামেলী ফিতা কেটে পিঠা উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক , শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
শীতের পিঠা বাংলার পিঠা খেতে খুশি বেশ, হরেক রকম পিঠার বাহার আমাদের এই দেশ। এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে এ আয়োজনটি সম্পন্ন হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শীতের পিঠার মোহময় গন্ধে মাতোয়ারা ছিল পুরো শোলাকিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ। পিঠা উৎসবকে ঘিরে স্কুল মাঠে বসানো হয় ১০টি স্টল। এসব স্টলে থরে থরে সাজানো ছিল নানা স্বাদের প্রায় ৭৫ রকমের বাহারি পিঠা। উৎসবে উল্লেখযোগ্য পিঠার মধ্যে ছিল জামদানি পিঠা, কুটুম পিঠা, মিষ্টি বড়া, আন্দুসা, ভাজা নকশি, মিষ্টি পুলি, কুসুম, বিবিখানা, লবঙ্গ,রসালো নকশি, লতিকা, শাহি ভাপা পিঠা, দুধ চিতই, ঝাল পুলি, গরুর মাংসের সমুচা, মুরগির মাংসের সমুচা, ছানার পুলি, দুধ পুলি, নারিকেল পুলি, পাটিসাপটা, তিল পুলি, ক্ষীরে ভরা পাটি সাপটা, সুজির পোয়া পিঠা, নারিকেলের নাড়ু, নকশি পিঠা, কলা পিঠাসহ বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু পিঠার সমাহার নজর কাড়ে সবার।
শিক্ষার্থী জুমা আক্তার বলেন, পিঠা উৎসবে গ্রামীণ ঐতিহ্যটাকেই তুলে ধরার চেষ্টা করছি। নিজেদের তৈরি শতাধিক জাতের পিঠা নিয়ে স্টলগুলো সাজানো হয়েছে।
অভিভাবক জুমা আক্তার বলেন, ‘এমন উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কারণ এমন আয়োজন করা হয়েছে বলেই আমরা সন্তান নতুন নতুন পিঠা দেখতে ও জানতে পারছে। বাসায় যদিও আমরা শীতের সময় নানা ধরেণ পিঠা বানিয়ে খেয়ে থাকি তা মাত্র দুই এক প্রকার। আর পিঠা উৎসবে এখানে অন্তত ৭৫ আইটেমের পিঠা দেখতে পারছি। তাই এই স্কুলের মতো অন্যান্য স্কুলেও এমন আয়োজন করা উচিত।’
শিক্ষার্থী লামিয়া মুনতাহা বলেন, ‘এর আগে একসঙ্গে এতো ধরেণের পিঠা কখনো দেখা ও খাওয়া হয়নি। স্কুলে এমন আয়োজনের জন্য আজকে আমরা এতোগুলো নানা ধরণের পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে ও খেতে এবং স্বাদ গ্রহণ করতে পারলাম। প্রত্যাশা করি ধরেণ আয়োজন যেন প্রতিবছর অব্যাহত থাকবে।’
শোলাকিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি বদরুল ইসলাম মুরাদ বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম এখনও অনেকে পিঠা সম্পর্কে জানেনা। তাই আমাদের বাঙালির সংস্কৃতি পিঠা সম্পর্কে বাস্তব শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যেই এই পিঠা উৎসবের আয়োজন। এমন আয়োজন ভবিষ্যতেও থাকবে বলে।’
পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর হাসিনা হায়দার চামেলী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু পিঠা উৎসব নয়, নবান্ন, বসন্ত, বর্ষ বরণসহ আমাদের বাঙালি জাতির যেসব সংস্কৃতি ও ঐহিত্য রয়েছে সেগুলোকে চর্চা করা উচিত ও প্রয়োজন তাহলে নতুন প্রজন্ম এগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে। আগে আমরা যা দেখেছি ও জেনেছি তা এই প্রজন্মকে জানানোর জন্য এসব আয়োজন করা প্রয়োজন।’