লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪৬ পিএম
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৩ পিএম
লক্ষ্মীপুর জেলা শহর ও আঞ্চলিক মহাসড়ক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুর জেলা শহর ও আঞ্চলিক মহাসড়ক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা উন্নতিসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শহরের উত্তর তেমুহনী, দক্ষিণ তেমুহনী ও বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও রায়পুর-ঢাকা সড়কে ২৫০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ক্যামেরাগুলো চালু থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এতে কমছে অপরাধ, শনাক্ত হচ্ছে অপরাধীরা।
জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের শনাক্তে পুলিশ কাজ করছেন। লক্ষ্মীপুরে শহরসহ আশপাশের এলাকা এবং হাইওয়ে সড়কে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এ কাজ করা হচ্ছে। জেলার বিভিন্নস্থানে ২৫০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে সিসি ক্যামেরাগুলো তদারকি করা হচ্ছে। পরিষ্কার দৃশ্য, সুস্পষ্ট নাইট ভিশন ও সুবিশাল মেমরি স্টোরেজসহ আইপি ক্যামেরার সমন্বয়ে এটি চলছে।
শহরের ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর ৭ জুন রাতে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ রোড এলাকায় আর কে শিল্পালয়ে বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি হয়। এ সময় মালিক ও তার ছেলে কুপিয়ে জখম করে স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়। ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ব্যবহৃত গাড়িচাপায় সফি উল্যা নামে এক বৃদ্ধ মারা যান। ওই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও লুটে নেওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন মোড়ে কিশোর গ্যাংদের আধিপত্য দেখা যায়। প্রায়ই তারা কারণে-অকারণে সংঘাতে জড়ায়।
লক্ষ্মীপুর শহরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ২০১৬ সালে পুলিশ শহরের ঝুমুর সিনেমাহল এলাকা থেকে শুরু করে দক্ষিণ তেমুহনী, আদর্শ সামাদ মোড়, চকবাজার ও বঙ্গবন্ধু চত্বরসহ বিভিন্নস্থানে অর্ধশত সিসি ক্যামেরা বসানো স্থাপন করে। তদারকি না থাকা পরে ক্যামেরাগুল কার্যকারিতা হারায়।
চররুহিতা গ্রামের বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ শরীফ বলেন, সম্প্রতি মোটরসাইকেল চুরি বেড়ে গেছে। এখন পুলিশের বসানো সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধীকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সহজ হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটা ধরাও হয়েছে।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী অজয় রায় বলেন, কলেজরোড এলাকায় বোমা ফাটিয়ে স্বর্ণ দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সিসি ক্যামেরা থাকলে তখন অপরাধীদের শনাক্ত করা সহজ হত। এজন্য আমাদের স্বর্ণকার রোডটিও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা প্রয়োজন।
সদর উপজেলার কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সভাপতি মামুনুর রশিদ বলেন, প্রচারণা চালিয়ে সিসি ক্যামেরার বিষয়টি জনসাধারণকে জানিয়ে দেওয়া উচিত। এতে জনগণ সচেতন হবে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, পুলিশের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এ কাজে আমরাও সহায়তা করেছি। জেলা শহরটাকে ক্যামেরার বেষ্টনিতে আনায় অপরাধীরা অপকর্ম করতে ভয় পাবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ বলেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আটবছর আগে শহরে কিছু সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। তা কিছুদিন সচল ছিল। পরবর্তীতে সঠিক তদারকি না হওয়ায় ক্যামেরাগুলো অচল হয়ে যায়। এবার ভালোভাবে তা করা হচ্ছে। আমাদের দক্ষ জনবলই কাজ করছেন। এতে জনগণ সিসি ক্যামেরার সুফল পাবেন। অপরাধও সহনীয় হচ্ছে।