× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

একটি সেতুর অভাবে দুই যুগের ভোগান্তি

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৫৭ এএম

আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৫৮ এএম

শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়নের সমশাবাদ লঞ্চঘাটের জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

শ্রীনগরের ষোলঘর ইউনিয়নের সমশাবাদ লঞ্চঘাটের জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের শ্রীনগর বড়খালের সমশাবাদ লঞ্চঘাটে সেতু না থাকায় দুই পারের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। স্থানীয়রা চাঁদা তুলে খালের এই স্থানে কাঠ-বাঁশের একটি সাঁকো তৈরি করে নিয়েছে। বর্তমানে সাঁকোটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে তারা বাঁশের এ সাঁকো দিয়েই চলাচল করে। এলাকাবাসী শ্রীনগর বড়খালে একটি সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সেতু আর হচ্ছে না। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রীনগর বড়খালের এপারে ইউনিয়নের সমশাবাদ লঞ্চঘাট বাজার, আর ওপারে মুন্সীপাড়া গ্রাম। খালের ওপর সেতু না থাকায় এলাকার লোকজন নিজেদের অর্থায়নে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছে। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন আশপাশের তিন গ্রামের হাজারো মানুষ চলাচল করে। সাঁকোটি দিয়ে হেঁটে কোনো রকম পারাপার হলেও মালামাল নিয়ে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বাজারজাতকরণে ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। খালের দুই পাড়ে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। সেতু না থাকায় শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে মানুষ। 

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্রীনগর বড়খালের সমশাবাদ লঞ্চঘাটে একটি নড়বড়ে বাঁশ-কাঠের সাঁকো রয়েছে। সাঁকোটির ওপরের কাঠের তক্তা ভেঙে গেছে। লোকজন ওই সাঁকো দিয়েই চলাচল করছে।

কৃষক আজিম খাঁ বলেন, ‘সেতুর অভাবে জমি থেকে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে সমস্যা হয়। বিকল্প রাস্তা দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহনে দ্বিগুণ খরচ করতে হয়। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হই। এ ছাড়া ছেলেমেয়েরা ঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারে না। বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপারের সময় অনেকেই পা পিছলে পড়ে যায়। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে।’ 

সমশাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আজিজ মিয়া বলেন, ‘কেউ অসুস্থ হলে সেই রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায় না। হাসপাতালে নিতে নিতে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। সেতু না থাকায় খুবই সমস্যা হচ্ছে। সরকার দেশের অবকাঠামোগত নানা উন্নয়ন করছে। কিন্তু আমাদের এলাকায় এই সেতু আর হলো না। সেতুর জন্য কত দিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে তা জানা নেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’ 

আরেক বাসিন্দা সোহাগ মিয়া বলেন, ‘সেতু না থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয় প্রসূতি নরীদের নিয়ে। তাদের হাসপাতালে নিতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় সেতু নির্মাণ করা হবে। কিন্তু নির্বাচনের পর আর কেউ খোঁজখবর রাখে না। অনেক দিন ধরে খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। আজও আমাদের দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগই দেখা যাচ্ছে না।’ 

শিক্ষার্থী এনামুল হক বলে, ‘বাঁশের সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে ভয় করে। মাঝে মাঝে পা পিছলে পড়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে। তারপরও যেতে হয়। অনেক সময় ক্লাসে দেরি হয়ে যায়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বিলম্ব হয়। দ্রুত এখানে সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানাচ্ছি।’ 

ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় দুই যুগ ধরে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হাজারো লোক পার হচ্ছে। দুই বছর ধরে শুনছি প্রকল্প জমা দেওয়া আছে, পাস হয়ে যাবে। আজও সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না।’ 

ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সেতু নির্মাণের প্রকল্প জমা দেওয়া আছে। শুনছি হয়ে যাবে। তবে এখনও টেন্ডার প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি।’

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মহিফুল ইসলাম জানান, এখানে সেতু নির্মাণের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলেই দরপত্র আহ্বান করা হবে। প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু হবে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা