লোহাগাড়া পাহাড়ি ছড়ায় অবৈধ বাঁধ
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:১৫ পিএম
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৩১ পিএম
সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর একান্ত সচিব (পিএস) ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য (লোহাগাড়া) এরফানুল করিম। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাহাড়ি ছড়ায় বাঁধ দিয়ে বন বিভাগের আড়াই হাজার একর জায়গায় অবৈধভাবে লেক তৈরি করে মাছ চাষের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর একান্ত সচিব (পিএস) ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য (লোহাগাড়া) এরফানুল করিমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে বনবিভাগ। এর মধ্যে এরফানের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত নাসির উদ্দিন ও মঞ্জুর আহমদের নামও উল্লেখ রয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বন বিভাগের কর্মকর্তারা বাদি হয়ে চট্টগ্রাম আদালতে পাঁচটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযোগগুলোকে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
তিনি বলেন, ‘সোনাকানিয়া ছড়ায় বাধ দিয়ে বনবিভাগের জায়গা দখল করে মাছ চাষের বিষয়ে বনবিভাগের পক্ষ থেকে পাঁচটি অভিযোগ আদালতে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো মামলা হিসেবে রুজুর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তার পক্ষে এসব মামলার বাদি হয়েছেন বড়হাতিয়া বিট কর্মকর্তা ও চুনতি রেঞ্জের কর্মকর্তাবৃন্দ। উক্ত মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভীর একান্ত সচিব (পিএস) এরফানুল করিমসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।’
সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সীমান্ত এলাকায় বনবিভাগের আড়াই হাজার একর বন অবৈধ দখল করে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সোনাকানিয়া ছড়ায় অবৈধভাবে বাঁধ দেওয়া হয়। পাহাড়ি ছড়ায় ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য, ২০ ফুট প্রস্ত ও ১০০ ফুট উচ্চতার একটি বাঁধ দিয়ে সেখানে মৎস্য চাষ শুরু করেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ নাছির ও মনছুর আলম। এই বাঁধ দেওয়ার কারণে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার অন্তত ৪ হাজার ২৫৫ একর জমির চাষাবাদ ব্যাহত হয়। কৃষকরা এই বাঁধ নির্মাণের শুরু থেকেই অভিযোগ করে এলেও প্রশাসন অবৈধ এই কর্মযজ্ঞের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে বনবিভাগ এখন দাবি করছে, তদন্তের সত্যতা পাওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়া শুরু করলে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর হস্তক্ষেপের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।
তিন বছর আগে বাঁধ করা হলেও গত ৩ ফেব্রুয়ারি এ বাঁধ কেটে দেওয়ার পদক্ষেপ নেয় বন বিভাগ। গত শনিবার বিকালে বন বিভাগের চট্টগ্রাম সদরের সহকারি বন সংরক্ষক মারুফ হোসেন এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেন নেতৃত্বে বনবিভাগের লোকজন বাঁধ কেটে দিয়ে বনভূমি উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করল বনবিভাগ।