জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪০ পিএম
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:২৫ পিএম
জয়পুরহাটে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিদের হাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রবা ফটো
১৫ বছর পর একটি হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন জয়পুরহাটের বিচারিক আদালত। রায়ে ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় পাঁচজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জয়পুরহাটের জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন। জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হত্যার ঘটনায় আদালত ১৭ জনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন। আর পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন। ওই ১৭ জনের মধ্যে দুজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। অন্যদের পুলিশ পাহারায় হাজতে পাঠানো হয়েছে।
সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন-- আরিফুল প্রামাণিক, আবু নাসের প্রামাণিক, ডা. মো. শাহজাহান আলী, হাদিউজ্জামান প্রামাণিক, আশরাফ আলী, মোহাম্মদ আলী ওরফে লাল মোহাম্মদ, মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, জহির প্রামাণিক, শামছুল আলম, সায়েম উদ্দিন, ওবাইদুল প্রামাণিক, সইম প্রামাণিক, রহিম প্রামাণিক, আবু সাঈদ, আবু বক্কর, বানু বেগম ও সাহেনা বেগম। তাদের মধ্যে আশরাফ আলী ও আবু সাঈদ পলাতক। দণ্ডিতরা পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর, চকপাড়া ও রাঘবপুর এলাকার বাসিন্দা।
খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন-- অমিছা বেগম, শহিদুল ইসলাম, বেলছি বেগম, হাফেজা ফকির ও সাবদুল ফকির।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, আয়মারসুলপুর চকপাড়া গ্রামের সালেহ মোহাম্মদের সঙ্গে প্রতিবেশী হাদিউজ্জামানদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়। ২০০৯ সালের ২ মে সকাল ৮টায় সালেহ মোহাম্মদ নিজের শ্যালো মেশিনের ঘর ভেঙে টিন নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বাড়ির অদূরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এতে সালেহ গুরুতর আহত হয়ে ছটফট করতে থাকেন এবং পানি পান করতে চান। প্রতিপক্ষরা তাকে জোর করে শুকনা মরিচ মেশানো পানি পান করান। এতে সালেহ আরও নিস্তেজ হয়ে পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আজিজুল হক বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় প্রতিপক্ষের ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পাঁচবিবি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মমিনুল হক।
তদন্ত শেষে আরও তিনজনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন। মামলাটি দীর্ঘ শুনানির পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে প্রায় ১৫ বছর পর আজ বিচারক এই রায় দেন।
এই রায়ে বাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করলেও রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে বিবাদী পক্ষ।