× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুবর্ণচরে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’

চুরি নয়, ধর্ষণ করাই ছিল উদ্দেশ্য: পুলিশ

নোয়াখালী প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:১৯ পিএম

আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৫৩ পিএম

আদালতে পাঠানোর আগে গ্রেপ্তার আসামিদের পুলিশ সুপারের কর্যালয়ের সামনে আনা হয়। প্রবা ফটো

আদালতে পাঠানোর আগে গ্রেপ্তার আসামিদের পুলিশ সুপারের কর্যালয়ের সামনে আনা হয়। প্রবা ফটো

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা আসামিদের পূর্বপরিকল্পিত বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাহিনীটির দাবি, ‘ধর্ষণের ঘটনা আড়ালে রাখতে আগে থেকেই সিঁধ কাটার পরিকল্পনা করা হয় এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে ঢুকে মা-মেয়েকে ধর্ষণ করে আসামিরা। তাদের উদ্দেশ্য চুরি করা ছিল না, ছিল ধর্ষণ করা।’

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নোয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ ঘটনায় করা মামলায় গতকাল মঙ্গলবার ওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও একই ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আবুল খায়ের মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, আবুল মুন্সি তার সহযোগী মো. মেহরাজকে দিয়ে ঘরের সিঁধ কাটায় এবং গরু বেপারী মো. হারুনকে নিয়ে ঘরে ঢুকে মা-মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ‘অভিযোগকারী নারী সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়ের মুন্সিকে প্রধান আসামি করে হারুনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় একজনের নামে মামলা করেন। মামলার পর বিশেষ অভিযান চালিয়ে আবুল খায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে গতকাল রাত ৩টার দিকে চরক্লার্ক ইউনিয়ন থেকে মেহেরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেহেরাজ একই এলাকার বাসিন্দা।’

মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হারুনের সহযোগিতায় ওই নারীকে আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বার ধর্ষণ করে। এরপর ওই নারীকে একইভাবে নির্যাতন করেন হারুন। চুরির কথা বলে আনা মেহরাজ পাশের রুমে থাকা ওই নারীর মেয়েকে যৌন নির্যাতন করে। এরপর কানে থাকা স্বর্ণের দুল ও টাকা নিয়ে যায় তারা। যাওয়ার সময় মেয়ের হাতের বাঁধন খুলে দেয় এবং ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ধমকি দেয় তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘মূলত হারুন গৃহবধূর বসতঘরের মালামাল চুরি করতে মেহেরাজকে উদ্বুদ্ধ করে। মেহরাজ রাজী হলে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করে। প্রবেশের পর হারুনের সঙ্গে মুন্সি মেম্বারকে দেখে মেহরাজ অবাক হয় এবং বুঝতে পারে ধর্ষণ করতেই তাকে দিয়ে চুরির ঘটনাটি সাজিয়েছে।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘আসামিদের আজ আদালতে সোপর্দ করা হবে। সেখানে রিমান্ড আবেদন করে তথ্য যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। বাকি আসামি হারুনকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) বিজয়া সেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজীব, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটখিল সার্কেল) নিত্যানন্দ দাস, চরজব্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামসহ জেলায় কর্মরত সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত সোমবার গভীর রাতে চরওয়াপদা ইউনিয়নে একটি নতুন বাড়িতে সিঁধ কেটে সংঘবদ্ধভাবে মা ও মেয়েকে ধর্ষণ করে। এ সময় ঘর থেকে দুটি নাকফুল, কানের দুল এবং ১৭ হাজার ২২৫ টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেন, কয়েক মাস আগে বাদীর স্বামী নতুন বাড়ি করেন। ওই বাড়িতে স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ বসবাস করতেন দিনমজুর। দুই দিন আগে কাজের সন্ধানে বাড়ির বাইরে যান বাদীর স্বামী। এই সুযোগে গত সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঘরের সিঁধ কেটে ভেতরে প্রবেশ করে একজন। পরে সে ঘরের দরজা খুলে দিলে আরও দুজন ভেতরে ঢোকে। তাদের মধ্যে দুজন ওই গৃহবধূকে এবং তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। গৃহবধূর হাত-পা ও মুখ বেঁধে ঘরে থেকে একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল, নাক ফুল ও নগদ ১৭ হাজার ২২৫ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে শিশুদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে গৃহবধূর বাঁধন খুলে দেয় এবং বিষয়টি চরজব্বার থানাকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের রাতে সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আলোচিত ওই ঘটনার মামলার রায়ে গত সোমবার ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক। এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বার। আলোচিত মামলার রায়ের ২৪ ঘণ্টা না যেতেই একই উপজেলায় আরেকটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা