× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘সকালে দেওয়া চাঁদার মেয়াদ ফুরায় বিকালের আগেই’

শরীয়তপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২৫ পিএম

শরীয়তপুরে যানবাহন থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ। প্রবা ফটো

শরীয়তপুরে যানবাহন থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ। প্রবা ফটো

শরীয়তপুরে যানবাহন থেকে ট্রাফিক পুলিশের ‘চাঁদাবাজি’র অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানবাহন ঢুকলেই কাগজ যাচাইয়ের নামে এসব চাঁদা আদায় করে ট্রাফিক পুলিশের একাধিক টিম। এক্ষেত্রে সহজ টার্গেটে পরিণত হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক ও ব্যক্তিমালিকানাধীন গাড়ি। অপরদিকে মাসিক মাসোহারার বিনিময়ে সড়কে অবাধে চলছে ফিটনেবিহীন বাসসহ একাধিক অবৈধ যানবাহন। ফলে যানজটেও নাকাল হতে হচ্ছে পথচারীদের। চালক ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার আমতলী নছিমন চালক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘সকালে দেওয়া চাঁদার মেয়াদ ফুরায় বিকালের আগেই। আবার বিকালে চাঁদা দিলে রাত পর্যন্ত চলতে পারি। চাঁদা না দিলেই মামলা দেয়।’

শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে চলাচলকারী গাজী আসমত আলী, মো. সুমনসহ একাধিক চালক অভিযোগ করে বলেন, ‘শুধু দিনে নয়, রাতেও চলে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি। পণ্যবাহী ট্রাক বা পিকআপ এ রুট দিয়ে গেলেই ট্রাফিক পুলিশদের চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখেন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চালক আরও জানান, শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের মনোহর বাজার মোড় থেকে নরসিংহপুর পর্যন্ত অন্তত ১০-১২টি পয়েন্টেসহ জেলা শহরের বিভিন্ন মোড়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে ট্রাফিক পুলিশ ও পুলিশ সদস্যরা চাঁদা আদায় করে। রাস্তায় যেকোনো গাড়ি চলতে দেখলেই তা থামিয়ে চালককে আড়ালে নিয়ে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে কাগজপত্র দেখার নামে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে মোটা অঙ্কের টাকার মামলার ভয়ভীতি দেখায়। 

তিন বছর ধরে শরীয়তপুরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করেছেন নিজাম উদ্দিন। নরসিংহপুর ফেরিঘাট, মঙ্গলমাঝির ঘাট, মনোহর বাজার, কাজির হাট এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার যানবাহন থেকে প্রত্যেক মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ছেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি তাকে এখান থেকে সরিয়ে ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট এলাকায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে বদলি করা হয়েছে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখীপুর এলাকার মেহেদী হাসান, ডামুড্যা পৌর এলাকার তুহিন সিকদারসহ একাধিক মোটরসাইকেল চালক বলেন, শরীয়তপুরে প্রবেশপথগুলো যেমন শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে নরসিংহপুর ফেরিঘাট, মঙ্গলমাঝির ঘাট, পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত, কাজিরহাট পয়েন্ট, শরীয়তপুর-মাদারীপুর সড়কের আংগারিয়া পয়েন্ট ও মনোহর বাজার মোড় যেন ট্রাফিক পুলিশের অবৈধ টাকা আয়ের কারখানা। উল্লেখিত এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ যত্রতত্র যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র চেক করার নামে চাঁদা আদায় করে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন নানা ব্র্যান্ডের গাড়ি কারণে-অকারণে থামিয়ে কাগজপত্র দেখার অজুহাতে হয়রানি করে আর চাঁদা আদায় করে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চালক ও যাত্রী জানান, রাস্তায় লক্কড়ঝক্কড় মার্কা ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী বাস চলাচল করলেও সেদিকে তাদের নজর নেই। ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী বাস আটক করা হচ্ছে না। তারা অভিযোগ করে বলেন, এসব বাসের চালক ও মালিকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা মাসোহারা নিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। আর এ মাসোহারার জোরেই রাস্তায় চলাচল বন্ধ হচ্ছে না। পুলিশ ফিটনেসবিহীন বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান চালাচ্ছে না। এ জন্য তারা ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজিকেই দায়ী করছেন। কারণ হিসাবে তারা বলছেন, এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ হলে পুলিশের অবৈধ বাণিজ্য কমে যাবে। 

সখীপুর থানার চরভাগা এলাকার ফিরোজ ভূঁইয়া ও রাজু মিয়ার অভিযোগ, তাদের মোটরসাইকেলের বৈধ কাগজপত্র থাকলেও ৮ হাজার টাকা করে মামলা দেন সার্জন মনুজিৎ নন্দী। তাদের অপরাধ একটাই তার চাহিদা মোতাবেক অবৈধ টাকা দিতে রাজি হননি তারা।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে টিআই নিজাম উদ্দিন ও সার্জন মনুজিৎ নন্দী অস্বীকার করেন। ট্রাফিক সার্জন মো. এনামুল হক বলেন, ‘নতুন যোগদান করেছি। অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়। এসব অভিযোগের সত্যতা পেলে নিয়ে আসবেন, ব্যবস্থা নেব।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা