রংপুর অফিস
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০০ পিএম
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫০ পিএম
রংপুরে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা বন্ধে বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস দোকানপাট বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে জেলা ও মহানগর দোকান মালিক সমিতি। প্রবা ফটো
শিল্প ও বাণিজ্য মেলা নিয়ে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও দোকান মালিক সমিতি মুখোমুখি অবস্থান করছে। মেলা বন্ধে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নগরীর সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমল এবং মার্কেট বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করেছে ব্যবসায়ীরা।
এতে সংহতি প্রকাশ করতে ঢাকা থেকে ছুটে আাসেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। অবিলম্বে মেলা বন্ধ না হলে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার মেলা উদ্বোধনের কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত বছরের নভেম্বর মাসে রংপুর ক্রিকেট গার্ডের মাঠে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা করে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি। এর দুই মাস অন্তরে রংপুর পুলিশ লাইনস মাঠে আবারও শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্যোগ নিয়েছে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। গেল বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসায় মন্দ দেখা দিয়েছিল। এতে করে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান চালাতে পারছে না।
অপরদিকে বাণিজ্যিক এলাকায় বার বার মেলা করায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। মেলা বন্ধে জেলা প্রশাসক ও সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে জেলা ও মহানগর দোকান মালিক সমিতি। এতেও কাজ না হওয়ায় গত ২৮ জানুয়ারি নগরীর নবাবগঞ্জ বাজারের সামনে তারা মানববন্ধন সমাবেশ করে।
এরপর গত ৩০ জানুয়ারি মহানগর দোকান মালিক সমিতি কার্যালয়ে সংগঠনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানবীর হোসেন আশরাফী লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ১ ফেব্রুয়ারি অর্ধদিবস ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ অবস্থান কর্মসূচিরর ঘোষণা দেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রংপুর নগরীর দোকানপাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। মোড়ে মোড়ে দোকান মালিক সমিতির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে সব দোকানপাট বন্ধ রাখেন। সুপার মার্কেটের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন, জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর লিটন পারভেজ, মহানগর দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানবীর হোসেন আশরাফী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন আলম, তথ্য সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজুসহ অন্যরা।
জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লিটন পারভেজ বলেন, ‘একটি জেলায় বছরে দু-তিন বার মেলা হওয়ায় সাধারণ ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এতে করে সরকারও তাদের রাজস্ব হারাচ্ছেন। আমি চাই দ্রুত এ মেলা বন্ধ করে ব্যবসায়ীদের বাঁচানো হোক।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘শিল্প ও বাণিজ্য মেলার নাম করে রংপুরে অপরিকল্পিতভাবে ঘন ঘন মেলার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে জেলা ও মহানগর দোকান মালিক সমিতি। মেলার নামে জুয়ার আসর বসানো, মধ্যরাত পর্যন্ত কেনা-বেচা করা হয়। অথচ আমরা রাত ৮টা বাজলেই দোকানপাট বন্ধ করে দেই। যারা মেলায় ব্যবসা করে তাদের কোনো ট্রেড লাইসেন্স নাই। তারা নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি জেলায় মেলা হবে পরিকল্পিতভাবে। সেখানে নিজ এলাকার পণ্য গোটা দেশে পরিচিত করতে মেলা হবে। রংপুরে শতরঞ্জির মেলা হবে, বেনারসির মেলা হবে। আমি আজ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও চেম্বারের সভাপতির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। এরপরেও তারা কথা না শুনলে স্থানীয় নেতারা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আকবর আলী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে দোকান মালিক সমিতির কোনো বৈঠক হয়নি। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি স্বাপেক্ষে মেলার আয়োজন করেছি। আমরা নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। দোকান মালিক সমিতি যদি আন্দোলন করে, তবে সেটা তাদের ব্যাপার।