আলমগীর হোসেন, জামালপুর
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৪০ পিএম
রুইন্দ্র মারাক এবেন্দ্রের পরিবার। প্রবা ফটো
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে দেশকে স্বাধীন করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জামালপুরের বকশীগঞ্জের কামালপুর ইউনিয়নের দিঘলাকোনা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রুইন্দ্র মারাক এবেন্দ্র। তিনি জেলায় ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা।
২০২১ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রুইন্দ্র মারাক। এর দুই বছর পর ২০২৩ সালের মার্চ মাসে শেরপুর জেলার বাসিন্দা সুবেন্দ্র সাংমা নিজেকে রুইন্দ্র মারাক এবেন্দ্রের সন্তান দাবি করে অভিযোগ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। এরপর বন্ধ হয়ে যায় রুইন্দ্র মারাকের স্ত্রী মিলন মারাকের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। এর ফলে বেকায়দায় পড়েছে পরিবারটি।
এদিকে সুবেন্দ্র সাংমার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদে তদন্তের সময় স্বাক্ষ্য দেন উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধা। তারা সকলে জয় দাংগো তার পরিবারকে মৃত রুইন্দ্র মারাকের পরিবার বলে স্বাক্ষ্য দেন।
রুইন্দ্র মারাক এবেন্দ্রের ছেলে জয় দাংগো বলেন, ‘বাবার পাওয়া মুক্তিযুদ্ধের ভাতার টাকায় আমাদের সংসার চলত। বাবা মারা যাওয়ার পরে সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। আমি মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সবার কাছে গিয়েছি। সবার দরজায় কড়া নেড়েছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছে না। আমাদের অবস্থা এখন খুবই শোচনীয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। সেই অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর সেই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। তবুও আমাদের ভাতা চালু হচ্ছে না।’
কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবর বলেন, যে অভিযোগ করেছে বা দাবি করছে তাদের আমরা মুক্তিযোদ্ধারা চিনি না। উড়ে এসে জুড়ে বসেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি অভিযোগকারী সুবেন্দ্র সাংমা।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অহনা জান্নাত বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাতা বন্ধ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে। এরপর আমাদের কাছে তদন্তের দায়িত্ব এলে আমরা তদন্ত করে তার প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখন এই বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। এখানে আমাদের করার কিছু নেই।’