কক্সবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:০৭ পিএম
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:২০ পিএম
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে সামাজিক সংগঠন ‘আমরা কক্সবাজারবাসী’। প্রবা ফটো
কক্সবাজারে অবৈধভাবে পার্কিং করা যাত্রীবাহী বাস থেকে চাঁদা আদায়ের ছবি ধারণ করায় এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে মাজাহারুল ইসলাম নামে এক ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে। পরে ওই সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ও পত্রিকার আইডি কার্ডও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর মোড়সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার সাংবাদিক রাশেদুল মজিদ কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক সকালের কক্সবাজার পত্রিকার বার্তাপ্রধান।
অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্ট মাজাহারুল ইসলাম কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত আছেন।
রাশেদুল মজিদ জানিয়েছেন, সকালে ব্যক্তিগত কাজে একটি অটোরিকশায় করে বাস টার্মিনালে যাওয়ার সময় কলাতলীর মোড়ে অবৈধভাবে বাস পার্কিংয়ের কারণে তীব্র যানজট দেখা দেয়। এ সময় তিনি নিজের মোবাইল বের করে ছবি ধারণ করেন। দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট মাজাহারুল ইসলাম অবৈধভাবে পার্কিং করা একটি বাসচালক থেকে টাকা নেন। এই ছবিটি মোবাইলে ধারণ করার সঙ্গে সঙ্গে সার্জেন্ট দৌড়ে এসে মারধর করে ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয়পত্র কার্ডটি দেখালে তাও ছিনিয়ে নেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পর পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করেছি। একই সঙ্গে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর সাংবাদিকের ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন ও কার্ডটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশের নিজস্ব তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত সার্জেন্টের বিরুদ্ধে পুলিশের নিজস্ব নিয়মে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। মোবাইল ফোন ও কার্ড সাংবাদিককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘মোবাইল কেড়ে নিতে গিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
কেন মোবাইল ছিনিয়ে নিতে হলো- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবুঝি।’
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে সামাজিক সংগঠন ‘আমরা কক্সবাজারবাসী’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে সভায় এ ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ ট্রাফিকের চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানানো হয়।
অপর এক বিবৃতি কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন ও কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহের, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এক ট্রাফিক সার্জেন্ট প্রকাশ্যে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত বেপরোয়া আচরণ। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার বিষয় না। দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়।