পটিয়া-বোয়ালখালী সড়ক
শফিউল আজম, পটিয়া (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৩ এএম
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৫২ পিএম
চট্টগ্রামের পটিয়া-বোয়ালখালী ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কে সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ ১০ ফুটের কৃষ্ণখালী সেতু। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের পটিয়া-বোয়ালখালী সংযোগ সড়কটি ১০-১২ ফুট প্রশস্ত ছিল। দুই উপজেলাকে সংযুক্তকারী এ সড়কটি প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্ত করা হয়। পাশাপাশি প্রশস্ত করা হয় তিনটি কালভার্ট ও একটি সেতুও। কিন্তু প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি পটিয়ার কৃষ্ণখালী সেতুটি। ফলে সেতুটি এখন সড়কের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরু ও জরাজীর্ণ এ সেতু পারাপারে ভোগান্তি পোহাচ্ছে যানবাহনের চালক, যাত্রীসাধারণসহ স্থানীয়রা। সেতুটি ভেঙে প্রশস্ত করে নির্মাণের দাবি তাদের।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে ১৪ কিলোমিটারের পটিয়া-বোয়ালখালী সড়কটি ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট প্রশস্ত করা হয়। পাশাপাশি ২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্ত করা হয় তিনটি কালভার্ট। ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান রয়েছে খানমোহনা সেতুর কাজ। শুধু বাকি আছে কৃষ্ণখালী সেতুটি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের নির্মিত সেতুটি মাত্র ১০ ফুট প্রশস্ত। ৭৫ ফুট দৈর্ঘ্য এ সেতুটি সড়কের তুলনায় প্রায় অর্ধেক (৮ ফুট) সরু। ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতো সেতুটির দক্ষিণ পাশের সড়কে রয়েছে বাঁক। ফলে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনের চালক, যাত্রীসাধারণসহ পথচারীদের। ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি পটিয়ার জিরো পয়েন্ট থানার মোড় থেকে শুরু হয়ে বোয়ালখালীর দাশের দিঘির পাড়ে গিয়ে যুক্ত হয়েছে। সড়কটি পটিয়া-বোয়ালখালী এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছোটবড় এক হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করে। এরই মধ্যে তারা প্রশস্ত সড়কের সুফল পেতে শুরু করছে। তবে একমাত্র কৃষ্ণখালী সেতু ও বাঁকটির জন্য পুরো সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সড়কের চেয়ে সরু হওয়ায় ও বাঁক থাকায় সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। তারা দ্রুত এখানে বাঁক সোজা করে নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
দক্ষিণ ভুর্ষি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছৈয়দ বলেন, ‘প্রশস্ত সড়কের কারণে কৃষ্ণখালী সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সড়কের সঙ্গে সেতুটি প্রশস্ত হলে এ ঝুঁকি থাকত না। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এমনটা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সেতুটি প্রশস্ত করে সড়কের সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন। এতে দুই লাইনে সহজেই গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এখন এক পাশ থেকে গাড়ি এলে অন্য পাশের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার অনেক সময় সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীদের দ্রুতগতির গাড়ির কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মোহাম্মদ মনির বলেন, ‘রাস্তা বড় সেতু ছোট। সেতুর ওপর দিয়ে একসঙ্গে পাশাপাশি দুটি গাড়ি চলাচল করতে পারে না। অনেক সময় মুখোমুখি হয়ে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে এখানে প্রশস্ত সেতু নির্মাণ জারুরি।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, ‘কৃষ্ণখালী সেতু প্রশস্ত করে নির্মাণের কোনো বরাদ্দ সড়ক বিভাগের নেই। নতুন করে কোনো প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়নি। তবে আগামীতে সড়কের সঙ্গে সমন্বয় করে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা প্রস্তাবনা আকারে পাঠানো হবে। বরাদ্দ পেলে প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’