ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ
খুলনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৬ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:০৪ পিএম
খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় তরুণী ও তার মা। প্রবা ফটো
খুলনায় এক উপজেলায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা সেই তরুণী এবার জানালেন, তার সঙ্গে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছে– এমন খবরও সত্য নয়। পুলিশ বলছে, অপহরণের খবরের কয়েক ঘণ্টা পর থানায় এসে পুলিশকেও একই কথা জানিয়েছেন ওই তরুণী।
খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) ও থানা পুলিশ সূত্র জানায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়ার পর তরুণী ও তার মাকে কেশবপুর উপজেলায় তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে একই মাইক্রোবাসে করে সোনাডাঙ্গা থানায় (ঘটনাস্থল খুলনা মেডিকেল কলেজ সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় অবস্থিত) আসেন তরুণী ও তার মা। রাত ১টার দিকে তারা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান।
থানা থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের কাছে তরুণী জানান, তিনি ধর্ষণের শিকার হননি। শনিবার রাতে তাকে তার ভাই অন্য আরেক হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। রবিবার বিকাল ৫টার দিকে সেখান থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তিনি ও তার মা গাড়িতে করে যশোরের কেশবপুর উপজেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। পরে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের খবর দেওয়ায় তারা থানায় আসেন।
রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারের সামনে থেকে তরুণীকে অপহরণের খবর পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২৫ জন এসে তরুণীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় দুর্বৃত্তদের সহযোগিতা করায় ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. তৌহিদুজ্জামানকে আটক করা হয়।
তার আগের দিন শনিবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ করেন তরুণী। বিয়ে করার আশ্বাস দেখিয়ে তাকে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে– অভিযোগ ছিল তার। যদিও এ ব্যাপারে থানায় কোনো অভিযোগ দেননি তরুণী ও তার পরিবার।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণী জানিয়েছেন ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ তাকে ধর্ষণ করেননি। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাকে কেউ অপহরণও করেনি। নিজেই কেশবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তরুণী ও তার পরিবার কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি।’
ওসি আরও জানান, অপহরণের অভিযোগে আটক রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওই তরুণী এবং তার পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ থেকে সরে আসার পর তরুণীর কাছে জানতে চাওয়া হয়– তার ভাইসহ দুজন তাকে হাসপাতালে কেন ভর্তি করেছিলেন। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তরুণী কোনো জবাব দেননি। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দাবি করে অতিরিক্ত প্রশ্ন করলে ‘পাগল’ হয়ে যাবেন বলেও দাবি করেন। কেশবপুরে কোন আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন সে বিষয়েও কোনো উত্তর দেননি তরুণী।
এ ব্যাপারে জানতে তরুণীর ভাই আফসার গোলদারের ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) আওতাধীন। জানতে চাইলে কেএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পুলিশ প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।’