মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৫ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:২১ পিএম
মাধবপুর শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ছয়টি গাছ নিলাম ছাড়া বিক্রি করায় আট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। প্রবা ফটো
হবিগঞ্জের মাধবপুর শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ছয়টি গাছ নিলাম ছাড়া বিক্রি করায় আট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কাঠ ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া গাছ কিনে কেটে নেওয়ার সময় বন বিভাগ গাড়িসহ গাছগুলো জব্দ করে। গাড়িসহ গাছ ফেরত পেতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও সমাধান না পেয়ে আটজনের বিরুদ্ধে রবিবার (২৮ জানুয়ারি) আদালতে মামলা করেন তিনি।
মামলার আসামিরা হলেন—শাহজীবাজার বিউবোর ক্যাশিয়ার মো. রায়হান, নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে মফিজ উদ্দিন আহমেদ, সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) মুনাব্বির হাসান, ইন্সপেক্টর পিডিবি ওমর ফারুক, ভারপ্রাপ্ত সুপারভাইজার খলিল, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুর রহমান, সিভিএ নেতা ও কর্মচারী আব্দুল মতিন ও ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা রেনু মিয়া।
জানা গেছে, পিডিবির কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী পিডিবির ভেতরের ছয়টি গাছ স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়ার কাছে বিক্রি করেন। গাছ বিক্রির টাকা ভাগবাটোয়ারা করতে গিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের গেটম্যানসহ কয়েকজনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান তারা। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের গেটম্যানসহ কয়েকজন বন বিভাগে খবর দিলে গাড়ি ও গাছ জব্দ করে বন বিভাগ।
এ ব্যাপারে কাঠ ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া বলেন, ‘শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ভেতর থেকে ছয়টি গাছ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। গাছগুলো কেটে বাইরে নিয়ে আসার জন্য শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলীর (পরিমাপ ও নিয়ন্ত্রণ) স্বাক্ষরিত একটি পত্র ও গেটপাস দেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৮ ডিসেম্বর গাছগুলো কেটে বাইরে নেওয়ার সময় গেটম্যান গাড়িসহ গাছগুলো আটক করে বন বিভাগে খবর দেন। বিট কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর গাড়িসহ গাছগুলো জব্দ করে নিয়ে যায়। তারপর আমি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে গাড়িসহ গাছগুলো ফেরত দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে গাছগুলো বিক্রির কথা অস্বীকার করেন তারা। পরে বাধ্য হয়ে গতকাল আমি আদালতে মামলা করেছি।’
জানতে চাইলে মামলার আসামি কর্মচারী আব্দুল মতিন বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি এলাকায় ছিলাম না। এলাকায় এসে জানতে পারলাম যে পিডিবির ভেতরে কিছু কাঠ জাতীয় গাছ পিডিবি মসজিদ উন্নয়ন ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ফান্ড সংগ্রহ বাবদ বিক্রি করে। আরেকটি পক্ষ এর বিরোধিতা করে গাছগুলো বন কর্মকর্তাকে দিয়ে আটকে দেয়। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
শাহপুর বিট কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘অবৈধভাবে গাছগুলো বিক্রি হচ্ছিল খবর পেয়ে আমরা গাড়িসহ গাছগুলো জব্দ করেছি। বৈধ কাগজপত্র দেখালে আমরা গাছ দিয়ে দেব।’
শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘গাছ বিক্রির বিষয়ে আমি অবগত নই, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’