লালমনিরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:২৭ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৫৫ পিএম
সন্তানের মৃত্যুতে মায়ের আহাজারি। প্রবা ফটো
লালমনিরহাটের দহগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক রবিউল ইসলাম ওরফে টুকলুর লাশ ফেরত দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনবিঘা করিডোরের জেব্রা ক্রসিং পয়েন্টে বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে পাটগ্রাম থানা-পুলিশের হাতে লাশ হস্তান্তর করেন ভারতের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘ভারতের পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে রবিউলের লাশ বিএসএফের মাধ্যমে দুই দেশের পুলিশের উপস্থিতিতে বিজিবির কাছে লাশ হস্তান্তর করে। লাশ গ্রহণের পর তা নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আঙ্গরপোতা বিওপি সীমান্তের ১ নম্বর মেইন পিলারের কাছাকাছি ভারতীয় অংশে বিএসএফের একটি টহল দলের গুলিতে নিহত হন রবিউল। পরে বিএসএফের সহযোগিতায় কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
নিহত রফিউল ইসলাম টুকলু পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দহগ্রামের আঙ্গরপোতা সীমান্তের ১ নম্বর মেইন পিলারের নিকট দিয়ে ১০/১২ জনের একদল চোরাকারবারি ভারতীয় কসমেটিকস নিয়ে পার হচ্ছিল। এ সময় ভারতীয় কোচবিহার-৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অজুন কোম্পানি সদরের উমর বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দল চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে বাংলাদেশি যুবক রবিউল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। বাকিরা পালিয়ে যায়। পরে ভারতীয় কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ বিএসএফ ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে নিহত রবিউল ইসলামের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ভারতীয় পুলিশ পাটগ্রাম থানা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে। পরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতো পাটগ্রাম থানা পুলিশ নিহতের পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করেছে। পারিবারিকভাবে রাতেই নিহত রবিউলের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
এর আগে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় রবিবার বিকালে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি।
রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পানবাড়ী কোম্পানি কমান্ডার আমানুজ্জামান আমান বলেন, ‘রবিউল ইসলামের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ভারতীয় পুলিশ ফেরত দিয়েছে। গুলিতে বাংলাদেশি রবিউলের মৃত্যুর ঘটনায় অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দুঃখপ্রকাশ করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যেন না ঘটে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে বিএসএফ।’