মৌলভীবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:০০ পিএম
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৮ পিএম
কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ। প্রবা ফটো
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, ‘কয়েক দিন আগে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা পাঁচজন কেবিনেট মিনিস্টার বসে চালের যাতে মূল্যবৃদ্ধি না হয়, তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেব দরকার হলে মজুদদারকে জেলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন প্রয়োজনে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব, মজুদদারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠাবে।’
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৩ নম্বর শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে ‘ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারা দেশের কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে চাল আমদানি হবে না। হংকং চাল রপ্তানি করবে না, ভারত রপ্তানি করবে না, ভিয়েতনাম রপ্তানি করবে না, চীন রপ্তানি করবে না। আমরাও চাল আমদানি করব না, আমাদের চাল রপ্তানিও হবে না। আমাদের দেশে উৎপাদিত চাল দিয়ে দেশের খাদ্যের সংস্থান হবে। উদ্বৃত্ত চাল সংরক্ষণ করা হবে।’
‘দেশে যা কিছু করা হচ্ছে সবকিছু জনস্বার্থেই করা হচ্ছে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আমরা আমাদের কৃষকদের বাঁচানোর জন্য যে প্রক্রিয়া সে প্রক্রিয়ার মধ্যে আমাদের প্রথমেই জমির বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
জেলা কৃষি বিভাগকে আব্দুস শহীদ নির্দেশনা দেন, ‘জেলার সকল পতিত জমি চিহ্নিত করে কোন কোন পতিত জমিতে কী ফসল হবে, কীভাবে চাষের আওতায় আনা যাবে তার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা আগামী ৫০ দিনের মধ্যে তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
কৃষকদের সেচ সংকট নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেচের সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায় তা দেখা হচ্ছে। আমাদের প্রিয় নেত্রী মতিয়া চৌধুরী যখন কৃষিমন্ত্রী ছিলেন তখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সারা বাংলাদেশে একমাত্র রাবার ড্যাম পেয়েছিলাম আমরা। যাতে করে এ এলাকার কৃষি ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য পাচ্ছি।’
মৌলভীবাজারে শ্রমিক সংকট রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে শ্রমিক সংকট কমাতে বেশি করে কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে। এটি চলমান একটি প্রক্রিয়া আছে, এটিকে সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। আমি পুনরায় সেটা পূর্ণোদ্যমে চালু করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। বর্তমানে এ জেলায় শ্রমিককের সংকট রয়েছে। কারণ, আমরা প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। প্রবাসে গিয়ে আমাদের জেলার শ্রমিকরা যে উপার্জন করেন দেশের কৃষি ক্ষেত্রে সে পরিমাণ উপার্জন করা সম্ভব হয় না। এখানে শ্রমিকের মজুরি কম, বিদেশে গিয়ে ২০-৩০-৪০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন। এ সমস্যা থেকে কীভাবে উত্তোরণ করা যায় তা ভেবেচিন্তে বের করার চেষ্টা করব।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এবার কঠিনভাবে আমাদের হাঁটতে হয়েছে। এবার বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী বিধিনিষেধ ছিল। যেগুলা আমাদের ওভারকাম করার সুযোগ ছিল না, মেনেই চলতে হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এবার খুব একটা বেশি করে সাংবাদিকরা লেখার সুযোগ পান নাই। হাঙ্গামা হইছে, জাল ভোট হইছে এমন কথা খুব একটা শুনা যায় নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার দেশে সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাজ করছে। তিনি মন্ত্রিসভা গঠনেও সৎ, পরীক্ষিত, পরিশ্রমী মানুষদের বাছাই করেছেন। সামনে রমজান মাস, এই মাসে কেউ যাতে কোনো ধরনের অভিযোগ তুলে আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা না আসে সেজন্য আমরা সর্বক্ষণ তৎপর রয়েছি। রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর।’