বান্দরবানে পর্যটকদের চলাচল
বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৫৯ পিএম
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৪ পিএম
বান্দরবানে আসা পর্যটকদের বিভিন্ন স্পটে নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হয় প্রধানত চাঁদের গাড়ি (জিপ)। এসব গাড়ির অধিকাংশেরই নেই ফিটনেস সনদ, নেই চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স। ফলে এগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ে। সংশ্লিষ্ট সবাই জানলেও এ বিষয়ে সুব্যবস্থার কোনো উদ্যোগ নেই। গাড়ির মালিক ও চালকরা এসব থোড়াই কেয়ার করেন।
রুমা উপজেলা জিপ মালিক সমিতির সভাপতি মো. দস্তগীর হোসেন বলেন, ‘গাড়ির কাগজপত্র ও ফিটনেস নেই; ড্রাইভারদেরও অনেকের লাইসেন্স নেই।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যেভাবে চলছে সেভাবেই ব্যবসা চালাচ্ছেন তিনি। চকরিয়া-লামা জিপ মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফরিদুল ইসলামও প্রায় এই কথা বলেন। তিনি এসব গাড়ি সম্পর্কে বলেন, তাদের সমিতিতে ১০০টি জিপগাড়ি, ১০টি মাইক্রোবাস ও অন্যান্য গাড়ি রয়েছে। জিপসহ কিছু গাড়ি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নিলামে সংগ্রহ করা হয়। কিছু যন্ত্রপাতি সংযোজন ও সংস্কার করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
কোনো কাগজপত্র আপডেট নেই স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘শুধু লট নম্বর দিয়েই চালানো হচ্ছে।’
আলীকদম ট্যুরিস্ট যানবাহন মালিক সমিতির ৪৩টি গাড়ি রয়েছে বলে জানান সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, গত তিন বছরে তাদের কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েনি। সমতল এলাকা থেকে বহিরাগত গাড়ি পাহাড়ি এলাকায় এসে দুর্ঘটনার শিকার হয় বলে তার দাবি।
বান্দরবান মাইক্রোবাস, জিপ ও পিকআপ মালিক সমিতির সভাপতি মো. নাছিরুল আলম বলেন, ‘নিলামের গাড়ি হওয়ার কারণে কাগজপত্র নেই। শুধু লট নম্বর দিয়েই চালানো হয়।’ অন্য সব গাড়ির কাগজপত্র আপডেট আছে ও চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে বলে তার দাবি।
এসব বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বান্দরবানের সব জিপ, বি-সেভেন্টি গাড়ি নিলামে সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে চালানো হয়। নিলামের গাড়িতে লট নম্বর ছাড়া কোনো কাগজপত্র থাকে না, যার কারণে ফিটনেস নবায়ন করা যায় না। সেগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। মাইক্রোবাস, জিপ ও পিকআপগুলোকে দুই বছর পরপর অনলাইনে ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করতে হয়। যেহেতু অধিকাংশ জিপ, মাইক্রোবাস বাইরের জেলা থেকে রেজিস্ট্রেশন করা, তাই বান্দরবান বিআরটিএ অফিস থেকে সেসব গাড়ির কাগজপত্র আপডেট আছে কি না, সেটা যাচাই করে জরিমানা করা ছাড়ার আর তেমন করার কিছু থাকে না।‘
তাহলে কি এ ব্যবস্থা চলতেই থাকবে—এমন প্রশ্নের জবাবে বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (প্রশাসন) নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’