সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মধ্যাঞ্চল
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:১৫ পিএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতেই ক্ষমতাসীন দলের নারী নেত্রীরা সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। কিশোরগঞ্জ থেকে এ দৌড়ে নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে মাঠে নেমেছেন অন্তত ১২ নারী নেত্রী। চালাচ্ছেন জোর লবিং। নিরবচ্ছিন্ন এ প্রচেষ্টায় কমতি না রাখতে এরই মধ্যে ঢাকায় অবস্থান করছেন বেশিরভাগ। তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করে নিজেদের পক্ষে নানা তৎপরতা শুরু করেছেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে প্রভাশালী নেতা-নেত্রীদের বাসাবাড়িতে গিয়েও উপস্থিত হচ্ছেন এসব সম্ভাব্য প্রার্থী। এছাড়া দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহের অপেক্ষায় আছেন তারা সবাই।
দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংরক্ষিত নারী আসনে আগ্রহী প্রার্থী তালিকা এবারই সবচেয়ে বেশি। এ নিয়ে দলীয় ফোরামেও দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নেতাকর্মীদের আশা, অনেকে ইচ্ছা পোষণ করলেও ত্যাগীরাই মূল্যায়িত হবেন।
আগ্রহীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত যাদের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে, তারা হলেনÑ দশম সংসদের সংরক্ষিত আসনের এমপি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলারা বেগম আসমা, বর্তমান সংরক্ষিত আসনের এমপি যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জাকিয়া পারভীন মনি, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা মহিলা সংস্থার সভাপতি মানছুরা জামান নতুন, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য শায়লা পারভীন সাথী, কৃষক লীগ নেত্রী অধ্যক্ষ গোলসান আরা বেগম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি কোহিনুর আফজল, জেলা উইম্যান অব চেম্বারের সভাপতি ফাতেমা জহুরা, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া জলিল নেন্সি, ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী জওশন আরা বেগম, জেলা যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি শাহীন সুলতানা ইতি, তাসলিমা সুইটি প্রমুখ।
প্রার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অধিকাংশই মনে করেন, দলের সভানেত্রীর সুবিবেচনায়ই তাদের একমাত্র ভরসা। নারী নেত্রী কোহিনুর আফজল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলীয় নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে দলের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে আসছি। সংসদ সদস্যের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপৃর্ণ। এজন্য জ্ঞান, মেধা, দক্ষতা সর্বোপরি সুশিক্ষিত হতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা স্মাট বাংলাদেশের রূপকার। যার দ্বারা দেশসেবা হবে, তাকেই তিনি মনোনয়ন দেবেন।
দলের একাধিক নেতা জানান, এমপি প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন পারিবারিকভাবেই দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। আবার কয়েকজন রয়েছেন বেশ নবীন। প্রার্থীদের কেউ কেউ দলের দুর্দিনে-সুদিনে দলের পতাকা ধরে রেখেছিলেন। আবার কেউ কেউ দলের সুবিধাজনক অবস্থা দেখে নতুন রাজনীতিতে নেমেছেন।
দলটির সিনিয়র একাধিক নেতা জানান, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ভোটারদের উৎসাহিত করতে মাঠে যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন, তাদের মধ্য থেকে কাউকে সংসদ সদস্য করা হলে রাজনীতিতে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। পাশাপাশি জেলার রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জানান, প্রত্যাশা সবাই করে। সংসদ সদস্যের পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেক্ষেত্রে অনেকেই চেয়েছেন। লবিং করছেন, জন-সংযোগসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছেন এ কথা সত্য। কাউকে ছোট করতে চাই না। তবে সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তার অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও বিচক্ষণতা আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃত। তাই তিনি এই বৃহৎ এলাকার জন্য যোগ্য নারীকেই এমপি বানাবেন তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট নাসিরউদ্দীন ফারুকী বলেন, সবাই এমপি হতে চান। কিন্তু রাজনীতির গভীর পড়াশোনা অধিকাংশেরই নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী কিশোরগঞ্জের বিষয়ে চমক দেখাবেন বলে তিনি মনে করেন।