সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ কর্মী নিহতের জের
সিলেট অফিস
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:১৪ পিএম
ট্রাকের ধাক্কায় প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে নিহত চার যুবক। ছবি : সংগৃহীত
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগের প্রায় তিনশ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (২০ জানুয়ারি) মধ্যরাতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সালাউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। তবে মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম। তিনি জানান, ভাঙচুরের ঘটনায় হাসপাতালের টিএইচও বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় চার ছাত্রলীগ কর্মী নিহতের জেরে শুক্রবার গভীর রাতে উত্তেজিত শতাধিক যুবক জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় একটি অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতালের আসবাবপত্র এবং জরুরি বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া কর্তব্যরত ডাক্তারকে মারধর ও হাসপাতালের গ্যারেজে থাকা একটি নতুন জিপেও আগুন দেওয়া হয়।
মামলার বাদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সালাহউদ্দিন মিয়া বলেন, হামলায় সরকারি সম্পত্তির বিপুল ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া আমরাও নিরপত্তাহীনতায় ভুগছি। ওই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর প্রথমে দুজনের মৃতদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হিল্লোল সাহা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর আরও দুজনকে নিয়ে আসা হয়। এ দুজনও আগেই মারা গিয়েছিলেন। প্রকৃত অর্থে আমাদের কিছুই করার ছিল না।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের সামনে আমরা ইসিজি করে দেখিয়েছিলাম যে তাদের হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তারা তা মানতে রাজি নন। তারা আমাদের চিকিৎসকের গায়ে হাত তুলেছেন, জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালে ভাঙচুর করেছেন। এমনকি আমাদের আবাসিক কমপ্লেক্সে কয়েক দফায় হামলা চালিয়েছেন।
এ বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শেখ মো. সেলিম বলেন, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, আবেগের বশবর্তী হয়ে নিহতের স্বজনরা এমনটি করেছেন। এ বিষয়ে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
তবে এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। পরবর্তী সময়ে উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদের মধ্যস্থতায় ঘটনাটি সমাধান হয়। এখানে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪ নম্বর বাংলাবাজার রাংপানি লক্ষ্মীপুর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের চার নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়।