মেরিনা লাভলী, রংপুর
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৩ এএম
জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতেই ক্ষমতাসীন দলের নারী নেত্রীরা সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে অনেকে কেন্দ্রে লবিং শুরু করেছেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর থেকে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ও জাতীয় পার্টির শাহানারা বেগমকে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হিসেবে ছিল না রংপুরের কেউ। তাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদে রংপুর থেকে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেত্রীদের নারী সংসদ সদস্য করার জোর দাবি উঠেছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করাসহ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার চ্যালেঞ্জ ছিল আওয়ামী লীগের। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র থেকে সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসবমুখর নির্বাচন করার নির্দেশনা ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সব নেতাকর্মীকে কাজ করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়। রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনে নৌকার পক্ষে প্রচারণার জন্য স্থানীয়ভাবে একাধিক কমিটি গঠন এবং বিভিন্ন সংসদীয় আসনে নেতাকর্মীদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। এসব কমিটিতে জেলার নারী নেত্রীরাও ছিলেন। এ নির্বাচনে রংপুরে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা ৮ হাজার ২৬৮ জন বেশি ছিল। নারী নেত্রীরা আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে নারী ভোটারদের নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টা চালান।
রংপুরের ৬টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৩টিতে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের দুজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এদিকে বিজয়ী প্রার্থীরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে নিজ এলাকায় ফিরে এলেও রংপুরের নারী নেত্রীরা হয়েছেন ঢাকামুখী। তারা সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হতে কেন্দ্রে লবিং শুরু করেছেন। নিজেদের রাজনৈতিক জীবন, বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তাদের ওপর নির্যাতন, লড়াই-সংগ্রামে অবদান, স্থানীয় রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে কর্মকাণ্ড, সামাজিক ও নারী উন্নয়নে নানা কার্যক্রম তুলে ধরছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। প্রভাবশালী এমপি ও পরিচিত মন্ত্রীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে তদবির শুরু করেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হতে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেনÑ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাফিয়া খানম, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোজী রহমান, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক লতিফা শওকত, সাবেক মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকিয়া সুলতানা চৈতী, মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্য পারভীন আক্তার, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ বেগম ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শাহনাজ বেগম।
ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের রংপুর বিভাগীয় কমিটির মহাসচিব মোজাক্কের হোসেন মঞ্জু বলেন, যেসব নারী নেত্রীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য করা উচিত। এতে করে স্থানীয় উন্নয়নের পাশাপাশি সংসদ অধিকতর কার্যকর ও গতিশীল হবে। যারা স্থানীয় অধিবাসীদের সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করতে পারবেÑ এমন নারীদের সংসদে যাওয়া উচিত বলে মনে করি।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের জন্য কোনো তালিকা আমাদের কাছে চাওয়া হয়নি। কেন্দ্রের কাছে সব নেত্রীর তথ্য আছে। তাদের বিগত দিনের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী সংসদ সদস্য নির্বাচন করবেন।