× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এক হাসপাতালে ঠাঁই নেই, অন্যটি তালাবদ্ধ

রাজু আহমেদ, রাজশাহী

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৩৭ এএম

শিশু হাসপাতাল চালু না হওয়ায় শীত মৌসুমে ভিড় বেড়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বেড খালি না থাকায় মেঝেতে ঠাঁই নিতে হচ্ছে রোগীদের। প্রবা ফটো

শিশু হাসপাতাল চালু না হওয়ায় শীত মৌসুমে ভিড় বেড়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বেড খালি না থাকায় মেঝেতে ঠাঁই নিতে হচ্ছে রোগীদের। প্রবা ফটো

তীব্র শীতে প্রতিনিয়ত ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও রোগীর চাপে ঠাঁই নেই হাসপাতালগুলোতে। এমনকি নগরীর সবচেয়ে বড় চিকিৎসাকেন্দ্র রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালেও এক বেডে চারজনকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। অথচ ঠিক পেছনেই তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে ২০০ শয্যার শিশু হাসপাতাল। উদ্বোধনের এক বছরেও সেবা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। এতে নগরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত শিশু হাসপাতালটি চালুর দাবি জানান। 

জানা যায়, শুরু হওয়ার পর নানা জটিলতায় দীর্ঘ ৭ বছর পর শেষ হয়েছে রাজশাহী শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজ। রাজশাহী নগরীর বহরমপুর টিবিপুকুরসংলগ্ন এলাকায় শিশু হাসপাতালের চারতলা ভবনের নির্মাণকাজ ২০১৫ সালের মে মাসে শুরু হয়েছিল। ১৩ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ে শুরু হওয়া হাসপাতালটির কাজ শেষ হয়েছে ৩৪ কোটি টাকায়। কয়েক দফা মেয়াদ ও ব্যয় বেড়ে ২০২২ সালের শেষের দিকে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২৯ জানুয়ারি হাসপাতালটির উদ্বোধনও করা হয়। কিন্তু কাকে, কীভাবে দায়িত্ব দেওয়া হবেÑ এই প্রশ্নের উত্তরে থমকে আছে।

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিভিশন-২) এবিএম হুমায়ুন কবীর বলেন, শিশু হাসপাতালের কাজও শেষ। কোন অথরিটি এবং কখন কাজ বুঝে নেবে বললেই আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভবন বুঝিয়ে দিতে পারব। তবে এভাবে ভবন ফেলে রাখলে এর অবকাঠামোসহ এসির মতো টেকনিক্যাল ও মূল্যবান সরঞ্জামগুলো নষ্ট হতে পারে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. নওশাদ আলী আরও জানান, ২০০ বেডের একটি শিশু হাসপাতাল প্রস্তুত আছে। অথচ তা চালু করা যাচ্ছে না। সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমরা বারবার বলছি হাসপাতালটি চালু করতে। আমরা আমাদের জনবল দিতেও প্রস্তুত। তবে নির্মাণের পরও ঠিক কী কারণে শিশু হাসপাতালটি চালু করা হচ্ছে নাÑ তা বোঝা যাচ্ছে না।

জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, শিশু হাসপাতালের এখনও কোনো অরগানোগ্রামই তৈরি হয়নি। প্রশাসনিক অনুমোদন ও অর্থনৈতিক কোড নেই। এটা সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রতিষ্ঠান। এই মুহূর্তে এটা শুরু করা কঠিন। শিশু হাসপাতাল যখন আমরা বুঝে নেব, এর সঙ্গে সঙ্গে ওখানে এই মুহূর্তে অন্তত ৮ জন সিকিউরিটি গার্ড লাগবে। সেই ম্যানপাওয়ার কোথা থেকে পাব?

এদিকে শীতের শুরু থেকেই তীব্র শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে রামেক হাসপাতালে। সংকটের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি শিশু ওয়ার্ডে। নির্ধারিত তিনটি শিশু ওয়ার্ডে ১৫০টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন আছে প্রায় ৪০০ শিশু। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হাসপাতালে ভর্তি শিশু রোগীদের অধিকাংশই শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও জন্ডিসে আক্রান্ত। 

সরেজমিনে রামেক হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডগুলোর নির্ধারিত বেডে ৩ থেকে ৫ জন করে শিশু রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যা কম থাকায় অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে মেঝেতে বিছানা পেতে শিশুকে কোলে নিয়ে রয়েছেন। রাজশাহীর পাশাপাশি এই হাসপাতালে নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া ও ঈশ্বরদী থেকে অভিভাবকরা তাদের শিশুদের নিয়ে আসেন উন্নত চিকিৎসার আশায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালটির নার্সরা জানান, এভাবে গাদাগাদি করে শিশুদের চিকিৎসা দিলে তাদের মধ্যে সংক্রামক রোগের বিস্তারের ঝুঁকি থাকে; যা অভিভাবক ও শিশু কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ না চাইলেও রোগীদের চাপের কারণে এভাবে চিকিৎসা দিতে বাধ্য হচ্ছে। 

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রি.জে. ডা. শামীম আহম্মেদ জানান, শীত বা গ্রীষ্ম সবসময়ই রামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি থাকে। তবে শীতের সময় শ্বাসকষ্টে প্রদাহ, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ডায়রিয়া ও জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এই বছরও একই চিত্র বিরাজ করছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা