× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অসময়ে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশাহারা মানুষ

আলমগীর হোসেন, জামালপুর

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:২৪ এএম

অসময়ের নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি। সম্প্রতি দেওয়ানগঞ্জের সানন্দবাড়ী ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী এলাকা থেকে তোলা ছবি। প্রবা ফটো

অসময়ের নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি। সম্প্রতি দেওয়ানগঞ্জের সানন্দবাড়ী ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী এলাকা থেকে তোলা ছবি। প্রবা ফটো

তীব্র শীতে যখন কাঁপছে দেশ, তখন ভাঙন তাণ্ডবে ঘুম নেই জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের সানন্দবাড়ী এলাকার ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের। এরই মধ্যে শতাধিক বসতবাড়িসহ অন্তত ২০০ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে কাটছে নদীপারের বাসিন্দাদের দিন-রাত। ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় তারা এখন দিশাহারা। প্রতিবছর বর্ষাকালে পানি বাড়লে নদীভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর অসময়ে শুকনো মৌসুমেই ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গত শুক্রবার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা। ভাঙন ঠেকাতে পাউবো ওইদিন থেকে শুরু করেছে জিও ব্যাগ ডাম্পিং। পাউবো বলেছে, নদীর তীর সংরক্ষণে স্থায়ী কাজের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, কুড়িগ্রাম-জামালপুরের সীমান্ত দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাটাদহপাড়া থেকে সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমটার এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। অসময়ে এই ভাঙনে গত এক মাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে শতাধিক বসতবাড়িসহ অন্তত ২০০ একর ফসলি জমি। ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী সানন্দবাড়ী হাট, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে চলে গেছে মধ্যেরচর, পাটাদহপাড়া, সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়ার শতাধিক বাড়িঘর। নদীর তীরে বাঁধ না থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার শত শত বসতবাড়ি, হাট-বাজার, ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি হাসপাতাল, একাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি। ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলেও জানান স্থানীয়রা। 

অসময়ের এই ভাঙনে জমিজমা ঘরবাড়ি ও ক্ষেতের ফসল হারিয়ে নিঃস্ব অনেকেই। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হলে বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। চর আমখাওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম লাভলু বলেন, ‘অসময়ের এই নদীভাঙনে এ অঞ্চলের মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। অনেক বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই শুকনো মৌসুমেই যদি নদীভাঙন রোধ করা না যায়, তাহলে বর্ষা মৌসুমে সবকিছু বিলীন হয়ে যাবে। তাই এই এলাকা বাঁচাতে হলে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’ 

প্রবীণ স্কুলশিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমার বয়সে কোনোদিন শীত মৌসুমে নদী ভাঙতে দেখিনি। বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর হঠাৎ করেই এই শীতে ভয়াবহভাবে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, মসজিদসহ সবকিছুই নদীগর্ভে চলে যাবে।’ 

চর আমখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে নদীভাঙন রোধ না করা হলে সানন্দবাড়ী হাট, একাধিক শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, পুলিশ তদন্তকেন্দ্রসহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হয়ে যাবে।’

পাউবো জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু হয়েছে। স্থায়ীভাবে নদীতীরে প্রতিরক্ষামূলক কাজ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’

সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ভাঙনরোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পরবর্তীকালে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা