শাহ আলম শাহী, দিনাজপুর
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:২৯ এএম
পলিথিন দিয়ে ঢেকেও রক্ষা করা যাচ্ছে না বীজতলা। প্রবা ফটো
দেশের শস্যভান্ডার খ্যাত দিনাজপুর জেলায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কৃষি খাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কয়েক দিন ধরে জেঁকে বসা কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। শীতকালীন বিভিন্ন সবজি আলু, পেঁয়াজ, টমেটো এবং বোরো ধানের বীজতলা ক্ষেত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একাধিক কৃষক। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, এ সময়ে বাড়তি যত্ন ও নিয়মিত বালাইনাশক স্প্রে করলে সমস্যা প্রকট হওয়ার কথা না।
জেলার একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতের কারণে আলুতে লেটব্লাইট রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। মড়ক ধরেছে অনেক ক্ষেতে। তাছাড়া শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশা থাকায় বোরো ধানের বীজতলা নিয়েও দুশ্চিন্তা করতে হচ্ছে কৃষকদের। কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হচ্ছে একের পর এক বোরোর বীজতলা। এরই মধ্যে অনেক এলাকায় বীজতলা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক বীজতলায় আবার চারার গোড়া এবং পাতা পচে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকেও ক্ষতি থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
জেলার বিরল উপজেলার পুরিয়া গ্রামের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক মো. মতিউর রহমান বলেন, বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আলু ক্ষেতে মড়ক ধরেছে। বালাইনাশক স্প্রে করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। টমেটোর গাছও মরে যাচ্ছে। কয়েকদিন ধরে শীতের যে তীব্রতা, তাতে ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, সাদা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রেখেও কোনো কাজ হচ্ছে না। প্রচণ্ড ঠান্ডায় ফসলের পরিচর্যা করতে কষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এবার কৃষিতে খুবই ক্ষতির সম্মুখীন হব।’
কৃষি দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানিয়েছেন, ‘সূর্যের আলো ঠিকমতো না পাওয়ায় ও তীব্র কুয়াশার কারণে এসব ফসল বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। তাই তাৎক্ষণিকভাবে এসব ফসল রক্ষায় বাড়তি যত্ন ও ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, বীজতলা যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর আলুতে নিয়মিত বালাইনাশক স্প্রে করলে সমস্যা থাকবে না। জেলায় এবার এক লাখ ৭৪ হাজার ৪২০ হেক্টর এক জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য বীজতলা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৫৭৯ হেক্টর জমিতে। অন্যদিকে জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৮২৮ একর জমিতে।