রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৪৫ পিএম
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৪৯ পিএম
বিভাগীয় শহর রাজশাহীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারও খুলে নেওয়া হচ্ছে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটগুলো। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামের পর এবার শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াম থেকে খুলে ফ্লাডলাইটগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিলেটে। এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কর্তৃপক্ষের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে বিভাগীয় স্টেডিয়াম চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, বগুড়া থেকে ১২ সদস্যের একটি শ্রমিক দল নিয়ে এসে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটগুলো খোলা হচ্ছে। ওই শ্রমিকদের দেওয়া তথ্যমতে, স্টেডিয়ামে থাকা ১৬০টি ফ্লাডলাইট খুলে তারা সিলেটে নিয়ে যাবেন। সিলেটে বিপিএল খেলা চলছে। এই লাইটগুলো সেখানে স্থাপন করা হবে। বিসিবির আদেশে এই ফ্লাডলাইটগুলো খুলে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান শ্রমিকরা।
এর আগে রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে লাগানো ফ্লাডলাইটগুলো খুলে লাগানো হয়েছিল খুলনা স্টেডিয়ামে। পরবর্তীতে সেগুলো আবারো রাজশাহী স্টেডিয়ামে প্রতিস্থাপন করার কথা থাকলেও আজও সেগুলো আর ফেরত আসেনি। আবার এই বিভাগীয় স্টেডিয়াম থেকে এর আগের দফায় ফ্লাডলাইট খুলে নিয়ে লাগানো হয়েছে চট্টগ্রামে।
২০১২ সালে একদফা ও ২০১৫ সালে আরেক দফা ফ্লাডলাইট থেকে কিছু বাল্ব খুলে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়। তারপর সেই বাল্বগুলো রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে আর ফিরে আসেনি। বাকি যেগুলো আছে সেগুলোরও ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ নেই। গুদামজাত করে রাখা হয়েছে বাল্বগুলো। বেশ কয়েক বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামের একটি ফ্লাডলাইট টাওয়ার ভেঙে পড়ে ঝড়ে। আরেকটিতে ধরেছে ফাটল। চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের জন্য এখানকারও কিছু বাল্ব খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা স্টেডিয়ামে ২০ হাজারের বেশি দর্শকের বসার সুবিধা আছে।
রাজশাহীর বিভাগীয় এই স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কর্তৃক পরিচালিত। রাজশাহী অঞ্চলে ক্রিকেট জনপ্রিয় করতেই স্টেডিয়ামটি গড়ে তোলা হয় ২০০৪ সালের দিকে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৩৫ হাজার। এই স্টেডিয়ামে ২০০৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের তিনটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ এবং ২০১০ সালের দক্ষিণ এশীয় গেমসের চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ইন্দো-বাংলা খেলায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচটিও অনুষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম এবং জাতীয় ক্রিকেট লিগের রাজশাহী বিভাগের হোম গ্রাউন্ড। এই স্টেডিয়ামের পাশে ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমি অবস্থিত, যা জাতীয় দলের অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট দ্বারা পরিচালিত হয়।
এই কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন রাজশাহীর ক্রীড়ানুরাগীরা। স্টেডিয়াম এলাকার বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, রাজশাহী শহরের স্টেডিয়ামগুলোকে রাত্রিকালীন খেলাধুলার আয়োজন থেকে চিরতরে বঞ্চিত করার অভিপ্রায় থেকেই হয়তো এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রবিউল ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াম থেকে এগুলো খুলে নিয়ে যাওয়ার অর্থ হলো, শুধু রাজশাহী শহরই নয়, এখানে পরোক্ষভাবে অবমাননা ও হেয়পতিপন্ন করা হচ্ছে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানকেও।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। এর আগেও মুক্তিযোদ্ধা স্টেডিয়াম থেকে ফ্লাডলাইট খুলে অন্যত্র নেওয়া হয়েছিল। আজও সেগুলো ফেরত আসেনি।