× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

বাগেরহাট প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০০ পিএম

আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৬ পিএম

ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

বাগেরহাটের শরণখোলায় মো. বিল্লাল শিকদার নামের এক মাছ ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। পরিকল্পিতভাবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে মামলা করে বিল্লালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসী ও তার পরিবারের। দ্রুত সময়ে সঠিক তদন্ত করে মামলা থেকে বিল্লালকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

কারাগারে থাকা বিল্লাল শিকদার উপজেলার রতিয়া রাজাপুর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাছ ব্যবসায়ী ইউনুস শিকদারের ছেলে। শরণখোলা থানার এসআই মো. ফারুক হোসেন বাদী হয়ে বিল্লালের নামে মামলা করেন।

শরণখোলা থানায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৩ জানুয়ারি দুপুরে রতিয়া রাজাপুর এলাকার সরকারি পুকুরপাড় থেকে বেকারি ব্যবসায়ী মো. মিজান হাওলাদার ও স্থানীয় মো. আলমগীর আকনের উপস্থিতিতে বিল্লাল শিকদারকে আটক করা হয়। তার প্যান্টের পকেট থেকে ১০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে ৪ জানুয়ারি বিল্লালকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

ঘটনাস্থল ঘুরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এজাহারের তথ্যের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি। বিল্লালকে আটকের সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনা দেখা ষাটোর্ধ্ব আয়েশা বেগম বলেন, ‘দেখলাম দুজন সাদা পোশাকের অপরিচিত লোক মোটরসাইকেল থেকে নামল। একজন নিজের পকেট থেকে কী যেন পুকুরের মধ্যে ফেললেন। এরপরেই একটা চেন (হাতকড়া) লাগিয়ে পোলাডারে (বিল্লাল শিকদার) ধরে নিয়ে আসল, আর বলে তুই গাঁজা পুকুরে ফেললি কেন। আর পোলাডা বলতেছে, আমি কোনো গাঁজা ফেলিনি। পুলিশটা গালিগালাজ করে, বুট জুতা দিয়ে পোলাডার পায়ের ওপর আঘাত করে এবং জোরে জোরে বলতেছিল- তুই ফেলাইছো, তোরে মাইরা ফেলাব। একপর্যায়ে মারতে মারতে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে গেল। আমি তো নিজের চোখে দেখেছি, পুলিশ নিজের পকেট থেকে কী যেন বের করে পুকুরের মধ্যে ফেলেছে। সঠিক বিচার হওয়া দরকার।’

এজাহারে উল্লিখিত সাক্ষী বেকারি ব্যবসায়ী মিজান হাওলাদার বলেন, ‘বিল্লাল শিকদারকে কখন কীভাবে আটক করেছে তার কিছুই জানি না। সিভিল পোশাকে দুজন পুলিশ এসে আমাকে ডেকে নাম-ঠিকানা লিখে একটা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে। বলে এখান থেকে মাদক ধরেছি, পকেট থেকে বের করে তিনটি ট্যাবলেট (ইয়াবা) দেখাল। পরে রাতে ফোন দিয়ে মায়ের নাম নিয়েছে এবং বলেছে আমাকে মাদক মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানি না।’

অপর সাক্ষী রতিয়া রাজাপুর এলাকার আলমগীর আকন বলেন, ‘পুলিশ পকেট থেকে দুটি ট্যাবলেট (ইয়াবা) বের করে আমাকে দেখাইছে এবং আমার নাম লিখেছে। মোবাইলে বিল্লালের ছবি দেখাইয়া বলেছে একে চেনেন নাকি। বলেছি, চিনি, সে তো ভালো ছেলে। যদি বলত আমাকে সাক্ষী দেবে, তাহলে আমি নাম-ঠিকানাও দিতাম না। পরে ফোন করে আমাকে বলেছে সাক্ষী দিতে হবে। আসলে বিল্লালকে ধরা ও মাদক উদ্ধারের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ ছাড়া বিল্লাল ভালো ছেলে।’

ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আমিনুল ইসলাম পিঞ্জু বলেন, ‘বিল্লালের বাবা সাগরে ব্যবসা করেন। শত্রু-মিত্র আছে, হয়তো তার ব্যবসা ধ্বংস করার জন্য তাকে ফাঁসানো হয়েছে।’

বিল্লাল শিকদারের বাবা ইউনুস শিকদার বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো মাদকের সঙ্গে জড়িত না। যাদের সাক্ষী মানা হয়েছে, তারাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না। পুলিশ পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। আমার ছেলের মুক্তি চাই।’

ধানসাগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন তালুকদার বলেন, ‘বিল্লাল ভালো ছেলে, তার মধ্যে নেশার কোনো আচরণ দেখিনি। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। সঠিক তদন্ত করে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার করা হোক।’

মামলার বাদী শরণখোলা থানার এসআই মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমি নিজে নেমে পুকুর থেকে ইয়াবা উঠিয়েছি। পরে থানায় এনে মামলা করি। মারধর করা হয়নি।’

ঘটনাস্থলে না থাকা ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করলেন কেন, জানতে চাইলে এসআই ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমি মামলার বাদী। বাকিটা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে রিপোর্ট দেবেন।’

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা