বেতাগী (বরগুনা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৪৫ পিএম
দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর ভেঙে যাওয়া অংশে বেড়া দিয়েছে স্থানীয়রা। সম্প্রতি বেতাগী উপজেলার বিবিচিনির গড়িয়াবুনিয়া বাজার সংলগ্ন ভোলারদোন এলাকা থেকে তোলা। প্রবা ফটো
সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বরগুনার বেতাগী উপজেলার গড়িয়াবুনিয়া বাজার সংলগ্ন ভোলারদোন খালের ওপর নির্মিত সেতুটি। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের। মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত সেতুটি সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিবিচিনি ইউনিয়নের গড়িয়াবুনিয়া বাজার এলাকায় ভোলারদোন খালের ওপর ২০০১ সালের দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ মিটার প্রস্থ লোহার সেতুটি নির্মিত হয়। নির্মাণের প্রায় দুই যুগ অতিবাহিত হলেও সংস্কার করা হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থানীয়রা কোনোরকমে চলাচল উপযোগী করে রেখেছে। সেতুটির ভেঙে যাওয়া অংশে দুর্ঘটনা এড়াতে বেড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। অন্য অংশ কাঠের তক্তা বিছিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল, আটোরিকশা ও পথচারীরা হেঁটে চলাচল করছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুটিয়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা এ সেতু দিয়ে আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া শান্তির হাট, দেশান্তরকাঠী, তালগাছিয়া, গড়িয়াবুনিয়া, পুটিয়াখালীসহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাঁঠালতলী এলাকায় এবং আঞ্চলিক সড়কে যাতায়াতে এ সেতু ব্যবহার করে। শুধু তাই নয়, তাদের উপজেলা শহর বেতাগীতেও যাতায়াত করতে হয় এ সেতু দিয়েই।
গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় সবচেয়ে বিপদের মুখে দুই শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী। কারণ এটির ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে তাদের। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।’ পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তৈয়েবা আক্তার বলেন, ‘জানডা আতে লইয়া নিচে চাইয়া, ডরে ডরে সেতু পারাই। কোন সোমায় পাওডা আইটকা ব্যথা পাই, হেই চিন্তায় থাহি।’
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যাতায়াতে প্রতিদিনই বিভিন্ন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। বয়স্ক ও অসুস্থ রোগীদের যাতায়াতের উপযোগী না হওয়ায় তাদের ভোগান্তি আরও বেশি। এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা এখানে দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে সেতুটি সংস্কারে বারবার তাগাদা দিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান স্থানীয় বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নওয়াব হোসেন নয়ন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি সেতুটি দ্রুত সংস্কারের। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানালেও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। সেতুটি দ্রুত সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণ করা হোক।’
জানতে চাইলে বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী রাইসুল ইসলাম আশ্বস্ত করে বলেন, ‘স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘবে ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দ এলে প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’