মেহেরপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:২৮ পিএম
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৮ পিএম
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামুন ও সীমা। প্রবা ফটো
স্ত্রীর করা যৌতুকের মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে এসেছিলেন মামুনুর রশিদ। হাজিরার পর আদালত ভবনের তৃতীয়তলার বারান্দায় অবস্থান করছিল ওই দম্পতি। একপর্যায়ে বারান্দা থেকে নিচে পড়ে যান তারা। আহত স্বামী-স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন।
ওই গৃহবধূর নাম সীমা। তার স্বামী মামুন মেহেরপুর গাংনী উপজেলার শওড়াতলা গ্রামের বাসিন্দা। গৃহবধূর ভাষ্য, তার স্বামী তাকে বারান্দা থেকে ফেলে দিয়েছেন। অন্যদিকে মামুনের অভিযোগ, তার স্ত্রী তাকে ফেলে দিতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে দুজনেই ওপর থেকে নিচে পড়ে যান।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে।
মামুন-সীমা দম্পতির বিয়ে হয় প্রায় এক যুগ আগে। সম্প্রতি সীমা তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক চাওয়ার অভিযোগ এনে মেহেরপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা করেছেন। সেই মামলার হাজিরা দিতে আজ আদালতে যান মামুন। হাজিরা শেষে তাদের দুজনকে আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় দেখা যায়।
তাদের পড়ে যাওয়ার ঘটনায় আদালত পাড়ার লোকজন হতভম্ব হয়ে পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
মামুনুর রশিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আজ হাজিরা দিতে এলে আমার স্ত্রী আমাকে বারান্দা থেকে ফেলে দেয়। ধাক্কা দেওয়ার সময় সামলাতে না পেরে (ভারসাম্য হারিয়ে) সে নিজেও পড়ে যায়।’
সীমা দাবি করেন, ‘আজ মামলার তারিখ ছিল, আপস হয়ে গেছে। ২ লাখ ৬০ হাজার টাকায় মীমাংসা হয়েছে। তিন ডেটে টাকাও দিয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার। আমি স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য বাইরে এলে তখন সে বারান্দা থেকে আমাকে কোলে তুলে তিনতলা থেকে ফেলে দেয়। এরপর আমার আর কিছুই মনে নেই।’
তবে কে কাকে ফেলে দিয়েছে তার বর্ণনা দেন একটি মামলায় হাজিরা দিতে আসা এক প্রত্যক্ষদর্শী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘মামলায় হাজিরা দিতে এসেছিলাম। তিনতলায় দাঁড়িয়ে আছি, হঠাৎ দেখি মেয়েটাকে কোলে তুলে ছেলেটা তিন তলা থেকে ফেলে দিল এবং সে নিজেও লাফ দিল।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাজমুস সাকিব প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘দুজন রোগী এসেছেন। একজনের নাম সীমা এবং আরেকজনের নাম মামুনু। মামুনুরকে ভর্তি করা হয়েছে। সীমাকে কুষ্টিয়ায় রেফার করা হয়েছে।’