কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৫৭ পিএম
রামু সদরের বৌদ্ধ বিহারে আগুন দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মো. আবদুল ইয়াছির শাহজাহান। প্রবা ফটো
কক্সবাজারের রামু সদরের বৌদ্ধ বিহারে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি ‘নির্বাচন পূর্ব অস্থিরতার জন্য পরিকল্পিত নাশকতা’ দাবি করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অগ্নিসংযোগকারী যুবককে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে নাশকতার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। গ্রেপ্তার করা যুবক বিএনপির সক্রিয় কর্মী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহাফুজুল ইসলাম।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম- মো. আবদুল ইয়াছির শাহজাহান। তিনি রামু উপজেলার ফতেখারকুল ইউনিয়নের পূর্ব মেরুংলা এলাকার বাসিন্দা। আবদুল করিম ওই ইউনিয়নের বিএনপির নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম বলেন, গত ৫ জানুয়ারি শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে রামু উপজেলা সদরের চেরাংঘাটাস্থ রাখাইন সম্প্রদায়ের দেড়শ বছরের পুরানো কাঠের তৈরি ‘উসাইচেন বৌদ্ধ বিহারে (বড় ক্যাং) আগুন দেওয়া হয়। আগুনে বিহারটির কাঠের সিঁড়ির অংশ পুঁড়ে গেলেও ব্যাপক ক্ষতি হয়নি। ঘটনার পর বিহারের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। একই সঙ্গে একটি নিদিষ্ট ফোন নম্বর থেকে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করে জানানো হয় ঈদগড় বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে দ্রুত গাড়ি নিয়ে রওয়ানা হয় ফায়ার সার্ভিস। গাড়িটি জোয়ারিয়ানালা অতিক্রম করার পর একই ফোন নম্বর থেকে আবারও ফোন আসে। জানতে চাওয়া হয় কতদূরে রয়েছেন এবং তাড়াতাড়ি আসতে বলা হয়। অবস্থান ফোনের ব্যক্তিকে জানিয়ে দ্রুত যাওয়ার হচ্ছে বলে জানানো হয়। কিন্তু ঈদগড় বাজারে পৌঁছার পর কোথাও আগুন দেখা যায়নি। এসময় নম্বরটিতে ফোন করা হলে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিস ফিরে আসে। আগুন দেওয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে বিদ্যুৎ বিভাগেও ফোন করা হয় একই নম্বরটি থেকে। জানানো হয় রামু বড় ক্যাং এ আগুন লেগেছে বিদ্যুৎ বন্ধ না করলে আগুন ব্যাপকতা বাড়বে। বিদ্যুৎ বিভাগ কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ, ফোন নম্বরসহ নানা সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে শনাক্ত করা হয় এই যুবককে। এরপর গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এই যুবককে। পরে ঘটনাস্থলে এসে যুবকের দেওয়া তথ্য মতে উদ্ধার করা হয় সিমটি।
পুলিশ সুপার বলেন, যে ফোন নম্বরটি ব্যবহার করা হয়েছে তার ভিন্ন কারও নামে রেজিস্ট্রেশন করা। নম্বরটি দীর্ঘদিন সচল থাকলেও ঘটনার দিনই ব্যবহার হয়েছে। যেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগে ফোন করা হয়েছে। মুলত পূর্ব পরিকল্পনা মতে কেবল নাশকতায় ব্যবহারের জন্য এই সিমটি নেওয়া হয়েছে। বিএনপির এই কর্মী বিভিন্ন সময় নাশকতার মুলক ঘটনা ঘটিয়েছে আসছে। যা সে নিজেই তার ফেসবুকে আপলোডও করেছে। রামুতে বিহারের ঘটনাটিও পরিকল্পিত। মুলত নির্বাচন পূর্ব সম্প্রদায়িক ঘটনা সূত্রপাত, বিদেশিদের মনযোগ আকর্ষণ এবং নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতার জন্য এমন ঘটনাটি ঘটানো হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে শাহজাহান।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলেই জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত কিনা বা কারা জড়িত।