× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পটুয়াখালী-২

এবার আক্ষেপ ঘোচাতে চায় বাউফলবাসী

এম এ হান্নান বাউফল (পটুয়াখালী)

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:২২ পিএম

আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৫১ পিএম

 আ স ম ফিরোজ

আ স ম ফিরোজ

পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনে নৌকার জয়জয়কার। এ আসনে দশবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আ স ম ফিরোজ। যার মধ্যে আটবার নির্বাচিত হন প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ। এর মধ্যে চারবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও মন্ত্রীর আসনে স্থান হয়নি তার। শুধু তা-ই নয় জেলার সব আসনে বিভিন্ন সরকারের সময়ে মন্ত্রী পেলেও বাউফল পায়নি। উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীসহ জনগণের দাবি এবার ফিরোজকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হোক। 

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর এ আসনে ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন প্রয়াত আজিজ খন্দকার। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। পরে ১৯৭৯ সালে নৌকার মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবার নির্বাচিত হন আ স ম ফিরোজ। সেই ১৯৭৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নয়বার মনোনয়ন পান তিনি। নির্বাচিত হন সাতবার। শুধু ২০০১ সালে তিনি বিএনপির শহিদুল আলম তালুকদারে কাছে পরাজিত হন। আর ২০০৬ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। 

সাতবার নির্বাচিত হলেও চারবার (১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮) সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। বাকি তিনবার (১৯৭৯, ১৯৮৬ ও ১৯৯১) ছিলেন বিরোধী দলে। প্রায় ৩৫ বছর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিপরিষদে স্থান হয়নি বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। তবে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদে হুইপ ও ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদের চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে শেষ বাজেট অধিবেশনে প্যানেল স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন সংসদীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতিও। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দশমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ১ লাখ ২৪ হাজার ২৯২ ভোট পেয়ে অষ্টমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকে পান ২ হাজার ৯৫১ ভোট। মোট কাস্টিং ভোটের প্রায় ৯৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ফিরোজ। 

জেলার অপর তিনটি আসনে বিভিন্ন সরকারের শাসনামলে একাধিক সংসদ সদস্য মন্ত্রিপরিষদে স্থান পান। শুধু স্বাধীনতার পর থেকে মন্ত্রিশূন্য বাউফল। তাই এবারের মন্ত্রিপরিষদে আ স ম ফিরোজকে চান এ উপজেলার মানুষ। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বলেন, বাউফল ঐতিহাসিক জনপদ। এখানকার অধিকাংশ মানুষ শিক্ষিত। শিক্ষিত উপজেলা হিসেবেই সারা দেশে পরিচিত। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের আমলা ছিলেন এখানকার অনেকে। কেউ মন্ত্রী হয়নি। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমরা কোনো মন্ত্রী পাইনি। এটা হতাশার, আক্ষেপের ও ক্ষোভের। আমরা এবার পূর্ণ মন্ত্রী চাই। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক প্রবীণ নেতা বলেন, বাউফল আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এ আসন থেকে বারবার নৌকার বিজয় হয়েছেন। ১৯৯৬ থেকে চারবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও আমরা মন্ত্রিত্ব থেকে বঞ্চিত। এবার আমাদের আক্ষেপ ঘুচবে বলেই প্রত্যাশা। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য করবেনÑ এমনটাই প্রশ্যাশা আমাদের।

বাউফল সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব উপজেলায় একবার হলেও মন্ত্রী পেয়েছে। শুধু আমরা বাউফলবাসীই হতভাগা। স্বাধীনতার পর থেকে এখানে নৌকার জয়জয়কার। বারবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। একাধিকবার সরকারও গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এবার যেন ফিরোজকে মন্ত্রী করা হয়। এ দাবি বাউফলের জনগণের।’ 

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি মোসারেফ হোসেন খান বলেন, ‘আ স ম ফিরোজ সততার সঙ্গে রাজনীতি করে আসছেন। তিনি একজন স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তার কোনো কলঙ্ক নেই। এমন একজন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদকে মন্ত্রিপরিষদে স্থান দেওয়া হোক। বাউফলের সর্বস্তরের মানুষের দাবি এটি।’ 

পটুয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল বারেক মিয়া বলেন, ‘যুদ্ধকালীন সময় আ স ম ফিরোজের সঙ্গে প্রথম পরিচয়। মুক্তিযুদ্ধে ফিরোজ সরাসরি অংশ নেন এবং ৯ নম্বর সেক্টরের চিফ পলিটিক্যাল মটিভেটর ছিলেন। তিনি বিএম কলেজের ভিপিও ছিলেন। দীর্ঘ ৫০ বছর বাউফল আওয়ামী লীগের হাল ধরে আছেন। সুনামের সঙ্গে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সফল চিফ হুইপও ছিলেন তিনি। তবে মন্ত্রী থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তাকে এবার মন্ত্রিত্ব দেওয়া না হলে অবিচার করা হবে। তাই মুক্তিযোদ্ধাসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রত্যাশা বঙ্গবন্ধুকন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে সম্মানিত করবেন।’ 

আ স ম ফিরোজ বলেন, ‘১৯৭৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ আমার ওপর আস্থা রেখে আসছে। আমিও বারবার দলকে বিজয় এনে দিয়েছি। ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হই। সেবার এরশাদ সরকার গঠন করে। তখন আমাকে মন্ত্রী ও আমার স্ত্রীকে সংরক্ষিত আসনের এমপি বানানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছি। যত দিন বাঁচব তত দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গেই থাকব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর আমার পূর্ণাঙ্গ আস্থা ও বিশ্বাস আছে। তিনি আমাকে যে দায়িত্ব দেন, তা বিগত দিনের মতো সততার সঙ্গে পালন করব।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা