× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মুন্সীগঞ্জ-৩

মৃণাল ও বিপ্লবের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

তানভীর হাসান, মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৩১ পিএম

 মৃণাল কান্তি দাস ও হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব। প্রবা ফটো

মৃণাল কান্তি দাস ও হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব। প্রবা ফটো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-৩ (সদর ও গজারিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন দুবারের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস। এই আসন থেকে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব। দলীয়-স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও মূল লড়াই হবে মৃণাল ও বিপ্লবের মধ্যে। কারণ এই দুই প্রার্থীই ক্ষমতাসীন দলের হেভিওয়েট নেতা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই এই দুই নেতার প্রচারে নেমেছেন।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমানসহ দুবারের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে কাঁচি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। ফয়সাল বিপ্লব জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের বড় ছেলে। 

বিপ্লবের নির্বাচনী প্রচারে বাবা মহিউদ্দিনসহ সদর ও গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী কাজ করছেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় নেতা মৃণাল কান্তি দাসের পক্ষেও যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রচারে অংশগ্রহণ করছেন। এ ছাড়া দুই উপজেলায় পৌর মেয়রসহ ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও বিপ্লবের পক্ষে রয়েছেন সমানে সমান। বিপ্লবের পক্ষে সদর উপজেলায় জনপ্রতিনিধি রয়েছে বেশি। অন্যদিকে মৃণালের পক্ষে গজারিয়া উপজেলায় রয়েছে বেশি জনপ্রতিনিধি। এসব জনপ্রতিনিধি সবাই আওয়ামী লীগ করেন। ফলে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগেরই। এদিকে ফয়সাল বিপ্লবের স্ত্রী চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনও এই নির্বাচনে কেটলি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তবে তিনি প্রচারে গিয়ে স্বামীর জন্য কাঁচি প্রতীকে ভোট চাইছেন।

সরেজমিনে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ শহরসহ আশপাশের ইউনিয়নগুলো প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে। তবে প্রচারের মাঠে সবচেয়ে বেশি সরব নৌকা ও কাঁচি। এই দুই প্রার্থী সদর ও গজারিয়ায় বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লায় উঠান বৈঠক করে চলেছেন। নির্বাচন ঘিরে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা। ইতোমধ্যে নৌকা ও কাঁচির সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে মারামারি এবং পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও ক্যাম্প ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এরই মধ্যে গতকাল নৌকার ক্যাম্প ও সমর্থকদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ডালিম নামে এক নৌকার কর্মী নিহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবের সমর্থকরা এ হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে দুই প্রার্থীই নির্বাচন মনিটরিং কমিটির (আদালতের) মুখোমুখি হয়েছেন। 

তবে এমন সংঘাতে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ ভোটাররা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী বলেন, যেভাবে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংঘাত লেগে আছে তাতে ভোটারদের মধ্যে ভয় কাজ করছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু এখানে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী রীতিমতো সংঘাত ও উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়েছেন। এতে ভোটের দিন সংঘাতের আশঙ্কায় ভোটার উপস্থিতিও কমে যেতে পারে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব বলেন, নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা আমার কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। আমার লোকজনকে মারধর করছেন। আমি এরপরেও আমার লোকজনদের বলে দিয়েছিÑ কেউ মারলে মার খেয়ে চলে আসবা, তারপরেও কিছু বলবা না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে অশান্তি সৃষ্টি করছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। 

নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, নৌকা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর প্রতীক। দলীয় সভাপতির প্রতীক। মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড দেখেই জনগণ আবারও আমাকে বেছে নেবে। একটি পক্ষ আমার ভোটারদের ভয়ভীতিসহ আমার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। আমি তারপরেও অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে এসব বিষয় আমার কর্মী-সমর্থকদের দেখতে বলেছি। আগামী ৭ তারিখে ব্যালটের মাধ্যমেই জনগণ এইসব বাধা-বিপত্তির জবাব দেবেন বলে আশা করি।

এই আসনে আরও প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পর্টির এ এফ এম রফিক উল্লাহ সেলিম (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র মো. আজিম খান (ঈগল), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. বাবুল মিয়া (চেয়ার), বিএনএফের মমতাজ সুলতানা আহমেদ (টেলিভিশন), বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের মুহাম্মদ ওমর ফারুক (মোমবাতি), বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির দুলাল হোসেন মন্ডল (একতারা) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. শাহীন হোসেন (ছড়ি)।

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮০ হাজার ২৪৫ জন। এর মধ্যে নারী ২ লাখ ৩১ হাজার ৭৪৬ ও পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫০৯ জন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা