× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসাইনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩২ পিএম

আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১২ পিএম

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসাইনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সম্পদ বিবরণীতে নিজ মালিকানায় কোনো দালান থাকার তথ্য প্রদর্শন করেননি মেসার্স আকর্স ট্রেডিং কোম্পানির মালিক ব্যবসায়ী এমইউএম আবুল হোসাইন। কিন্তু অনুসন্ধান চালিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তারা তার অত্যাধুনিক একটি পাঁচ তলা ভবনের সন্ধান পেয়েছেন। শুধু বাড়িটি নয়, তার সম্পদ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৭ কোটি ৯৪ লাখ ৪৭ হাজার ১২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্যও পেয়েছে দুদক কর্মকর্তারা।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ব্যবসায়ী এমইউএম আবুল হোসাইনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। 

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এ মামলা করেছেন একই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন। মামলায় ব্যবসায়ী আবুল হোসাইনের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

অভিযুক্ত ব্যবসায়ী এমইউএম আবুল হোসাইন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর এলাকার বাসিন্দা। তিনি মেসার্স আকর্স ট্রেডিং কোম্পানি, ইউনিশীপ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও মেসার্স মাউ সল্ট ক্রাশিং ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক।

এ সর্ম্পকে জানতে চাইলে দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর উপপরিচালক নাজমুস সাদাত প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ব্যবসায়ী আবুল হোসাইন সম্পদ বিবরণীতে তার নিজ নামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের যে তথ্য দিয়েছেন, আমরা অনুসন্ধান করে তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অর্জিত সম্পদের তথ্যের মিল পাইনি। অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিনি ৭ কোটি ৯৪ লাখ ৪৭ হাজার ১২ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা অর্জন করতঃ নিজ ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ ঘটনায় আজ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ব্যবসায়ী এমইউএম আবুল হোসাইন নিজ নামে ২০ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ২০২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৫৪ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ সর্বমোট ২১ কোটি ১৯ লাখ ৭২ হাজার ২০২ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের ঘোষণা প্রদান করেছেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে সরেজমিনে পরিদর্শন, প্রাপ্ত রেকর্ডপত্রাদি এবং সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর সম্পদের ক্রমিক নং-০৯ এবং ১৩ তে প্রদর্শিত স্থাবর সম্পদসমূহ তিনি ক্রয়সূত্রে অর্জন করা সত্ত্বেও সম্পদের প্রকৃত বাজারমূল্য অজ্ঞাত রাখার নিমিত্ত সাফ বিক্রি কবলা দলিল সম্পাদন না করে হেবা লিল সম্পাদনের মাধ্যমে নিজ নামে অর্জন করেছেন। একইভাবে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর স্থাবর সম্পদের ক্রমিক নং-৪০, ৬০, ৬২, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭২, ৭৫, ৭৬, ৭৭, ৮১, ৮২, ৮৩, ৮৪, ৮৫, ৮৭, ৮৯, ৯১, ৯৪, ৯৫ তে প্রদর্শিত স্থাবর সম্পদসমূহ ক্রয়সূত্রে অর্জন করা সত্ত্বেও সম্পদের প্রকৃত বাজারমূল্য অজ্ঞাত রাখাসহ উক্ত সম্পদ ক্রয়ের ক্ষেত্রে তার ব্যয়িত অর্থের উৎস/পরিমাণ আড়াল করার অসৎ উদ্দেশ্যে সাফ-বিক্রি কবলা দলিল সম্পাদন না করে আম-মোক্তার নামা দলিল সম্পাদন করেছেন। অপরদিকে সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর সম্পদের ক্রমিক নং-৬১, ৮৬, ৯৩, ৯৭, ৯৮, ৯৯ তে প্রদর্শিত স্থাবর সম্পদসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং দখল পুনরুদ্ধার করে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস ও অসৎ উদ্দেশ্যে ভূমিমালিকদের নিকট থেকে তার নিজ নামে আম-মোক্তার নামা দলিল সম্পাদন করেছেন। কিন্ত দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উক্ত সম্পত্তিসমূহ তার ব্যবসার আয় হতে অর্জন করেছেন মর্মে ঘোষণা প্রদান করেছেন। তিনি সম্পদ বিবরণীতে তার নিজ মালিকানায় কোনো দালান/ভবন থাকার তথ্য প্রদর্শন করেননি। যাচাইকালে ২০০৫-০৬ করবর্ষের আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, আয়কর বিভাগ কর্তৃক কর নির্ধারণ আদেশে এই মর্মে বর্ণনা করেছেন যে, ‘সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, করদাতা জনাব এমইউএম আবুল হোসাইন মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রামে অত্যাধুনিক নির্মাণশৈলীতে নির্মিত প্রতি তলা ২৪ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব একটি চার তলা দালানে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। দালানের প্রায় প্রতিটি কক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।’ তৎপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানকালে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, আসামির পৈত্রিক বাড়িতে অর্থাৎ আলী মিয়া সাব-রেজিস্ট্রারের বাড়ি, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, ৩৮নং ওয়ার্ড, ডাকঘর-আনন্দ বাজার-৪২১৫, বন্দর, চট্টগ্রামে অত্যাধুনিক নির্মাণশৈলীতে নির্মিত একটি পাঁচ তলা ভবন/বিল্ডিং রয়েছে।

এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে দায়-দেনাসংক্রান্ত কোনো তথ্য দাখিল/প্রদর্শন করেননি। যাচাইকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় তার নিজ নামে ১১ কোটি ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪৮ লাখ ১২ হাজার ৭৫০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ সর্বমোট ১১ কোটি ৫৯ লাখ ১২ হাজার ২৫০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া একই সময়ে আয়কর নথি পর্যালোচনায় তার পারিবারিক ও অন্যান্য খরচ বাবদ ১ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার ৪৫০ টাকা ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ১২ কোটি ৬৭ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ টাকা।

অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র এবং আয়কর নথি পর্যালোচনায় তার নিজ নামে উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ১৯৮৯-৯০ করবর্ষে তার আপন তিন ভাইয়ের নিকট থেকে উপহার বাবদ প্রাপ্ত ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৬ টাকা এবং উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ৬০ হাজার টাকা; ২০০০-০১ করবর্ষে স্ত্রীর নিকট হতে উপহার বাবদ প্রাপ্ত ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সরকার কর্তৃক ভূমি অধিগ্রহণের বিপরীতে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত ৯১ লাখ ২ হাজার ৭৬৩ টাকা; কৃষি আয় বাবদ ৫ লাখ ৬০ হাজার ৪৩০ টাকা, ব্যবসা হতে আয় বাবদ ৩ কোটি ৫২ লাখ ৮২ হাজার ৭১১ টাকা এবং ব্যাংকের সুদ বাবদ অর্জিত মুনাফা ৬ হাজার ৮ টাকাসহ তার সর্বমোট ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৫ হাজার ৬৮৮ টাকা গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে আয়ের উৎস (১২,৬৭,৫২,৭০০- ৪,৭৩,০৫,৬৮৮) = ৭,৯৪,৪৭,০১২/- টাকা কম পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি নিজ নামে ৭ কোটি ৯৪ লাখ ৪৭ হাজার ১২ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা অর্জন করতঃ নিজ ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা