× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গলাচিপা পৌরসভা

পৌরসভার ৫ পদে নিয়োগে অর্ধকোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য

কাজল বরণ দাস, পটুয়াখালী

প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০২ পিএম

 আহসানুল হক তুহিন। প্রবা ফটো

আহসানুল হক তুহিন। প্রবা ফটো

পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভায় সম্প্রতি পাঁচটি শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি শূন্যপদ অস্থায়ী ভিত্তিতে পূরণের নিমিত্তে গত ১৩ নভেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন মেয়র। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের ছাড়পত্রের আলোকে রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত শনিবার গলাচিপা সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লিখিত পরীক্ষা শেষে তড়িঘড়ি করে ফলাফল প্রকাশ করে রাতেই মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

এই নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। পাঁচটি পদে নিয়োগে অর্ধকোটি টাকারও বেশি ঘুষ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার কর্মচারী, চাকরিপ্রার্থী ও স্থানীয়রা।

নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় দারোয়ান পদে রয়েছেন গলাচিপা পৌরসভার কর্মচারী নিয়োগ ও পদন্নোতি বাছাই কমিটির আহ্বায়ক পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিনের ব্যক্তিগত গাড়িচালক ও বাসার কেয়ারটেকার মো. আরিফুর রহমান এবং নকশাকার পদে মেয়রের শ্যালকের স্ত্রী। এ ছাড়াও নিয়োগ বোর্ডের সদস্যের অনুপস্থিতিতে আবেদনপত্র যাচাইবাছাই করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন কয়েকজন সদস্য। 

নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, গলাচিপা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাছিম রেজা, পৌরসভার সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাসুম বিল্লাহ ও শহর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইয়াসমীন।

চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনে অসঙ্গতি ও মিথ্যা তথ্য স্পষ্ট থাকার পরেও স্বজনপ্রীতি ও ঘুষের বিনিময়ে তাদের লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে কৌশলে উত্তীর্ণ দেখিয়ে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে আত্মগোপনে চলে যান মেয়র আহসানুল হক তুহিন।

অসঙ্গতির আবেদনগুলোর মধ্যে দৃশ্যমান দারোয়ান পদে ৫০১ রোল নম্বরের প্রার্থী মেয়রের গাড়িচালক মো. আরিফুর রহমান। তিনি আবেদনের সঙ্গে বোয়ালিয়া বিপিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সনদ জমা দিয়েছেন। আবেদনের তথ্য অনুযায়ী ২০০৮ সালে তিনি জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.২৫ পেয়েছেন। কিন্তু ২০০৮ সালে জেএসসি পরীক্ষা চালুই হয়নি। ২০১০ সালে প্রথম জেএসসি পরীক্ষা হয়। এমন জাল সনদ দেওয়ার পরও নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিপিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে জমা দেওয়া ওই সনদের ফটোকপি সত্যায়িত করতেও জাল-জালিয়াতি করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আকরামুজ্জামানের সিল ও স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। মেয়রের নির্দেশে এই ভুয়া সিল তৈরি করে মেয়রের বাসায় বসেই এসব ভুয়া সনদ তৈরি করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আকরামুজ্জামান বলেন, ‘আরিফুর রহমান নামের এক ব্যক্তির এনআইডি ও সনদে আমার সিল স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। ওই সিল-স্বাক্ষর আমার নয়।’

গত শনিবার রাতে পৌরসভা ভবনের দ্বিতীয় তলায় আরিফুর রহমানকে ভুয়া সনদ ও জাল-জালিয়াতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পালিয়ে যান।

নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব পৌরসভার সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আবেদন যাচাইবাছাইয়ে আমি ছিলাম। তবে আমি এ পৌরসভায় অতিরিক্ত দায়িত্বে, তাই বেশি সময় দিতে পারিনি।’ আবেদন যাচাইবাছাইয়ের সঙ্গে সংযুক্তি যাচাই করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যাচাই করা হয়েছে। কোনো কথা থাকলে মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, আমি জানি না।’ 

এ বিষয়ে জানতে পৌরসভার শহর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইয়াসমীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হরেও তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।

নিয়োগ বোর্ডের অপর সদস্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাছিম রেজা বলেন, ‘আমি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হলেও যাচাইবাছাইতে ছিলাম না। শুধু মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলাম। নিয়োগের বিষয়ে কোনো কথা থাকলে আপনি মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’

এ বিষয়ে গলাচিপা পৌরসভার কর্মচারী নিয়োগ ও পদন্নোতি বাছাই কমিটির আহ্বায়ক পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিনের সঙ্গে তার অফিসে, বাসায় এবং মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। মেয়রের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেই আত্মগোপনে চলে যান তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা