× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জাতীয় সংসদ নির্বাচন

রাজশাহীর ৫ আসনে নৌকার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ

রাজশাহী অফিস

প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩২ এএম

আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৩ এএম

রাজশাহীর ৫ আসনে নৌকার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ

রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই নৌকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতারা। অন্যান্য দলের প্রার্থী থাকলেও তাদের প্রচার-প্রচারণায় ঘাটতি এবং এলাকায় অপরিচিত হওয়ায় তারা ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন। ভোটারদের মাঝেও তাদের নিয়ে আলোচনার চেয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাই বেশি সাড়া জাগিয়েছে। শহর থেকে গ্রামের পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার তথা সবখানেই শুধু নৌকা বা কাঁচি বা ঈগলের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ৯ জন। মোট ৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ৬ জন এবং বাকি ২৭ জন জাতীয় পার্টি, বিএনএম, জাসদ, তৃণমূল বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন একটি আসনে 

রাজশাহীর-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আসনটিতে এবার ছয়টি দলের প্রার্থী রয়েছেন ছয়জন। তবে আসাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনএমের প্রার্থী মতিউর রহমান মন্টু। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের নেতা হিসেবে রাজপথে ছিলেন। মন্টুর পরিচিতি নির্বাচনী এলাকায় খুব একটা নেই। সেই সঙ্গে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর তুলনায় তার ব্যানার ও পোস্টারও তেমন চোখে পড়েনি। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাতেও তিনি পিছিয়ে। বিষয়টি তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তার দলটি নতুন। তিনি এখন পর্যন্ত দলের নেতা-কর্মীই গুছিয়ে উঠতে পারেননি। তবে তিনি নির্বাচনে জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এই আসনটিতে প্রার্থীদের মধ্যকার সুসম্পর্ক সবার নজর কেড়েছে। 

পাঁচটিতেই নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ

রাজশাহী-১ (তানের-গোদাগাড়ী) আসনের তিনবারের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর প্রতিপক্ষ তিনজন আওয়ামী লীগের নেতা। যাদের দুইজনই নারী। তবে ফারুক চৌধুরীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম রাব্বানী। ১০ বছর ধরে এই দুই প্রার্থী নির্বাচনী এলাকায় একে অপরের নামে নানা কথা বলে বেড়িয়েছেন। এই দ্বন্দ্বে শামিল ছিলেন রাজশাহী-৩ আসনের এবারের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ। আসনটিতে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী ১১ জন। রাজশাহী-২ আসনে ৭ জন প্রার্থী থাকলেও ১৪ দলীয় জোট নেতা ও ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা নৌকা প্রতীক পেয়েও স্বস্তিতে নেই। আসনটিতে মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা নৌকা প্রতীক ছেড়ে কাঁচি প্রতীকের হয়ে মাঠে নেমেছেন। কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। ১৪ দলীয় সভায়ও নৌকা প্রতীকের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাসহ শরিক দলগুলো। মহানগর আওয়ামী লীগের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে মুষড়ে পড়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার নির্বাচনী শিবির। পাড়া-মহল্লার সড়কে নৌকার চেয়ে কাঁচির ব্যানার ও পোস্টারের সংখ্যাটাই বেশি।

রাজশাহী-৪ আসনে তিনবারের এমপি এনামুল হক এবার নৌকা পাননি। তাহেরপুরের পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ নৌকা পেয়েই মাঠে নেমে পড়েছেন। স্বতন্ত্র হয়ে মাঠে নেমেছেন এমপি এনামুল। তার দাবি, নৌকার সমর্থকরা তার কর্মীদের পেটাচ্ছেন এবং ব্যানার ও পোস্টার লাগাতে দিচ্ছেন না। এই আসনে ছয়জন প্রার্থী থাকলেও দেখা নেই বাকি চারজনের।

রাজশাহী-৫ আসনে নৌকা পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা। ছয়জন প্রার্থী থাকলেও নৌকার সামনে ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যুবলীগের সাবেক নেতা ওবায়দুর রহমান। রাজশাহী-৬ আসনের তিনবারের এমপি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তার প্রতিপক্ষ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রাহেনুল হক রায়হান।

রাজশাহী-৩ বাদে যে পাঁচটি আসনে নৌকার যারা বিরোধিতা করছেন তাদের ইসির ইশতেহারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এক হয়ে কাজ করতে দেখা গেছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে তারা একটি পক্ষ হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় রাজনীতিতে এই বিভক্তির পেছনে রয়েছে কেন্দ্রের কিছু নেতার আশকারা।

নির্বাচন ঘিরে সহিংস রূপে ফিরছে রাজশাহী-৪ (বাগমারা)

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে সর্বহারা ও বাংলা ভাই বাহিনীর সহিংসতায় রক্তাক্ত জনপদে ফিরে আসে শান্তির সুবাতাস। তবে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগেরই দুই নেতার হাত ধরে আরও সংহিস হয়ে উঠেছে উপজেলাটি। গত শনিবার বিকালে উপজেলার মাদারীগঞ্জ বাজারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সমর্থকদের সঙ্গে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর উপস্থিতিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে দিয়ে প্রচার মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ও বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ একে অপরকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ করেছে।

উভয় পক্ষের দাবি নির্বাচনে সহিংসতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এলাকায় সর্বহারা দলের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। সহিংসতা নিরসনে গত ২৫ ডিসেম্বর প্রশাসন এই দুই প্রার্থীকে এক টেবিলে বসিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করে। প্রশাসনের কাছে কথা দিলেও উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত এখনও বিদ্যমান রয়েছে। গত ১৫ বছর আসনটির এমপি এনামুল হক। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আগে সম্পৃক্ত না থাকলেও এনামুলকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ শুরু থেকেই তার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এবার দলীয় মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েছেন তিনি। লড়ছেন কাঁচি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে। প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। প্রতিদিনই ঘটছে সহিংস ঘটনা। স্বতন্ত্র প্রার্থীর দাবি, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এলাকায় যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এনামুলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এবার তিনি নৌকা পেয়ে বাগমারা কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা