কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:২৭ পিএম
কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্র সৈকত থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর সৈকত পর্যন্ত স্রোত ধারার নাম, ‘বাংলা চ্যানেল’। ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের চ্যানেলটি ৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিট তথা ২১৫ মিনিটে পাড়ি দিয়ে ১৮তম আসরে প্রথম হয়েছেন সাঁতারু সাইফুল ইসলাম রাসেল।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে পাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্র সৈকত থেকে এই সাঁতার শুরু হয়। যেখানে অংশ নিয়েছেন মোট ৪৩ জন সাঁতারু। যাদের মধ্যে দুইজন নারী ও ৪১ জন পুরুষ। দুই নারী সাঁতারুর মধ্যে একজন ভারতের নাগরিক, অপরজন বাংলাদেশের। তারা হলেন রচনা শর্মা ও এম এস টি শোহাগী আক্তার। ৩ জন সাঁতার সম্পূর্ণ শেষ করতে না পারলেও অপর ৪০ জন সম্পূর্ণ করেছেন দীর্ঘ এই সাঁতার যাত্রা।
১৮তম বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২৩’ আয়োজন করেছে ‘ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার’ ও ‘এক্সট্রিম বাংলা। এই আয়োজনের প্রধান সমন্বয়ক ও ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিপটন সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, অংশগ্রহণকারিদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম রাসেল ৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিট, এমডি ইলিয়াস হোসেন ৪ ঘন্টা ৪ মিনিট, সুমন বালা ৪ ঘন্টা ১১ মিনিট, মো মনিরুজ্জামান ৪ ঘন্টা ১৩ মিনিট, মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আরাফাত ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট, সালাহ উদ্দিন ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট, আবাদুল ইসলাম ৪ ঘন্টা ১৭ মিনিট, এম এস টি শোহাগী আক্তার ৪ ঘন্টা ২৬ মিনিট, মো. কামাল হোসেন ৪ ঘন্টা ২৭ মিনিট, এমডি আব্দুল মতিন ৪ ঘন্টা ২৭ মিনিট, মাহাদী হাসান সায়েম ৪ ঘন্টা ৩৪ মিনিট, এমডি মইজ উদ্দিন মেরাজ ৪ ঘন্টা ৩৫ মিনিট, এমডি মাহমুদুল হাসান ৪ ঘন্টা ৩৮ মিনিট, এমডি ফারুক হোসেন ৪ ঘন্টা ৩৯ মিনিট,এমডি নাসির উদ্দিন ৪ ঘন্টা ৪০ মিনিট, শেখ মাহবুব উর রহমান ৪ ঘন্টা ৪৩ মিনিট, এমডি জামিল হোসেন ৪ ঘন্টা ৪৩ মিনিট, এমডি নাদিম মাহমুদ ৪ ঘন্টা ৫০ মিনিট, আতিকুল ইসলাম ৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিট, জয়তু দাস ৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিট, উজ্জাল চৌধুরী ৪ ঘন্টা ৫৯ মিনিট, রচনা শর্মা (ভারতীয়) ৫ ঘন্টা, শরভ শমাদ্দার ৫ ঘন্টা ২ মিনিট, এমডি গোলাম হাফিজ ৫ ঘন্টা ৫ মিনিট, আল্লামা দিদার ৫ ঘন্টা ৭ মিনিট, হুমায়েদ ইছাহাক মুন ৫ ঘন্টা ৭ মিনিট, জাফর সাদাক ৫ ঘন্টা ৭ মিনিট, এমডি জিহাদ হুসেন ৫ ঘন্টা ১৫ মিনিট, মো নাজমুজ সাকিব শিমুম ৫ ঘন্টা ২৩ মিনিট, হাসান ইমাম ৫ ঘন্টা ২৪ মিনিট, লিপটন সরকার ৫ ঘন্টা ২৬ মিনিট, মুরাদ হোসেন ৫ ঘন্টা ২৬ মিনিট, এমডি আবুল্লাহ আল রোমান ৫ ঘন্টা ৩০ মিনিট, সবুজ কুমার বর্মন ৫ ঘন্টা ৩৭ মিনিট, এস এম শারিয়ার মাহমুদ ৫ ঘন্টা ৫৩ মিনিট, ফরিদ আহমেদ খান ৫ ঘন্টা ৫৬ মিনিট, এমডি মুশা আহমেদ ৫ ঘন্টা ৫৭ মিনিট, আব্দুল ইলা ৬ ঘন্টা ১০ মিনিট, মোহাম্মদ তামিম পারভেজ ৬ ঘন্টা ১০ মিনিট এবং এমডি ফজলে রাব্বি চৌধুরী ৬ ঘন্টা ৩৫ মিনিটের সময় চ্যানেলটি পাড়ি দেন। দুই নারী রচনা শর্মা ৫ ঘন্টা এবং শোহাগী আক্তার ৪ ঘন্টা ২৬ মিনিটে চ্যানেলটি পাড়ি দিয়েছেন। এছাড়াও ফজলুল কবির সিনা, আব্দুল্লাহ আল সাবিত, মাহমুদুর রহমান বনি এই ৩ জন সাঁতার শেষ করতে পারেননি।
বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২৩ এর উদ্বোধন করেন টেকনাফ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফানুল হক চৌধুরী।
কথা হয় ভারতীয় সাঁতারু রচনা ভাটিয়া শর্মার সঙ্গে। তিনি ভারতের TRICLUB GURGAON-এর একজন সাঁতারু ও ট্রায়াথলন কোচ। এ বছর ফিনল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপসহ চার বারের আয়রনম্যান ফিনিশার। তিনি তার ৫০তম জন্মদিনে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার কাটতে প্রস্তুত হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বাংলা চ্যানেল সাঁতার সম্পর্কে জানতে পারি। তখন থেকেই এই আয়োজনে অংশ নিতে অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু কোভিডের কারণে মাঝের কয়েক বছর অংশ নিতে পারিনি। এবারের আয়োজনে অংশ নিতে পেরে দারুণ রোমাঞ্চিত। আমাকে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা করি, আগামী বছরগুলোয় ভারত থেকে আরও অনেক বেশি সাঁতারুরা এখানে অংশ নেবে।’
টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, এই সাঁতার প্রতিযোগীতা প্রশংসার দাবিদার। ইংলিশ চ্যানেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলা চ্যানেলও বিশ্ব দরবারে পরিচিতি লাভ করছে। প্রতিবছর কোন না কোন ভিন দেশি বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিচ্ছেন। আগামীতেও উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে এই আয়োজনে।
বঙ্গোপসাগরে দূরপাল্লার সাঁতারের উপযোগী ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল আবিষ্কার করেন প্রয়াত কাজী হামিদুল হক। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়। সে বার সাঁতারে অংশ নিয়েছিলেন লিপটন সরকার, ফজলুল কবির সিনা ও সালমান সাইদ।